ওড়িশার বালশ্বরে গত শুক্রবার যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তের কাজ শেষ। এই দুর্ঘটনার মূল কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে। রবিবার (৪ জুন), জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কী কারণে ঘটল এই দুর্ঘটনা?


'তদন্ত শেষ, চিহ্নিত দুর্ঘটনার মূল কারণ', কী জানালেন রেলমন্ত্রী?দুর্ঘটনাস্থলে কাজের তদারকিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব
Follow us on

google-news-icon
বালেশ্বর:

ওড়িশার বালেশ্বরে গত শুক্রবার যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তের কাজ শেষ। এই দুর্ঘটনার মূল কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে। রবিবার (৪ জুন), সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। উদ্ধারকাজ এবং ওই রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল ফের চালু করার কাজের তদারকি করতে শনিবার থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে আছেন রেলমন্ত্রী। এদিন তিনি জানিয়েছেন, এই মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে এবং রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার এই বিষয়ে শিগগিরই তাঁর রিপোর্ট জমা দেবেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ করেছিলেন, তাও খারিজ করে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার সঙ্গে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার কোনও সম্পর্ক নেই।

এদিন অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন এবং শিগগিরই তিনি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন। তবে, আমরা এই দুর্ঘটনার কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই মুহূর্তে রেল যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের দিকেই আমাদের যাবতীয় মনোযোগ রয়েছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই হতাহতদের সকলকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে লাইনগুলিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি সারাইয়ের কাজ চলছে। বুধবার থেকেই ফের ওই লাইনে ট্রেন চলাচল চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “বুধবার সকালের মধ্যে লাইন পুনরুদ্ধারের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছি আমরা, যাতে ওই দিন থেকেই ফের ট্রেন চলাচল চালু করা যায়।”

শনিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ট্রেনে যে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনগুলিতে সেই সুবিধা ছিল না। এটা রেল মন্ত্রকের গাফিলতি বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল যে কারণ বলেছিলেন, সেই কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি। এই দুর্ঘটনার কারণ ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় বদল।”

ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং কী?

ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং রেলওয়ে সিগন্যালিং বা সঙ্কেত ব্যবস্থারই অন্যতম অংশ। কোনও নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্য দিয়ে নিরাপদভাবে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করে এই মাইক্রোপ্রসেসর-ভিত্তিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থা। একটা সময় রেলে আন-ইন্টারলকড সিগন্যালিং সিস্টেম ছিল। যা অতীতে বহু দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে। বর্তমানে, রেল সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে আধুনিক ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। ভারতীয় রেলওয়ের রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন বা আরডিএসও (RDSO) জানিয়েছে, ইলেকট্রনিক ইন্টারনকিং সিস্টেমে, সফ্টওয়্যার ভিত্তিক ইন্টারলকিং লজিক প্রয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে কোনও ওয়্যারিং পরিবর্তন না করেই, সহজে এই ব্যবস্থায় যে কোনও পরিবর্তন করা যায়। রেল ইয়ার্ড থেকে এই ব্যবস্থায় নির্দেশ পাঠানো হয়। ফেইল-সেফ পদ্ধতিতে সেই নির্দেশ প্রক্রিয়া করে প্রয়োজনীয় আউটপুট তৈরি করে এই ব্যবস্থা। এত কিছুর পরও, কীভাবে ঘটে গেল এই দুর্ঘটনা? এই প্রশ্নেরই জবাব পেতে অপেক্ষা করতে হবে সুরক্ষা কমিশনারের রিপোর্টের জন্য।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours