নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্তের বক্তব্য, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার দায়িত্ব ও ক্ষমতা একমাত্র রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে।

Panchayat Election 2023: 'অতীতের ঘটনা দেখিয়ে রাজ্যের গায়ে ছাপ ফেলে দেওয়া যায় কি?' জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রশ্ন বিচারপতিরকলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই জায়গায় জায়গায় অশান্তির অভিযোগ। মনোনয়ন পর্বের দিনগুলিতে সময় যত এগিয়েছে, তত তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। রক্তারক্তি, খুনোখুনির অভিযোগও উঠেছে। আর এসবের মধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আর সেই নিয়েই বেশ অসন্তুষ্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা ওঠে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর একক বেঞ্চে। নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্তের বক্তব্য, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার দায়িত্ব ও ক্ষমতা একমাত্র রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে।

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, মানবাধিকার কমিশন কেবল সুপারিশ করতে পারে। কিন্তু অতীতের কোনও ঘটনার কথা দেখিয়ে আগামীতে কী হবে, তা নিয়ে এভাবে কিছু আন্দাজ করে নেওয়া যায় না। রাজ্যের বক্তব্য, মানবাধিকার কমিশন নিজেদের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নির্দেশ দিয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য সেই সময় প্রশ্ন করেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, এমন কোনও ঘটনা কোথাও হয়েছে কি না। সরাসরি নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন কোনও ঘটনা হয়েছে কি না, তাও জানতে চান। যদিও মানবাধিকার কমিশনের তরফে জানানো হয়, মহিলাদের প্রতি অবিচার ও মৃত্যু আটকাতেই তারা এই পদক্ষেপ করছে। আর এখানেই বিচারপতি মানবাধিকার কমিশনকে বলেন, কমিশন কোথাও দেখায়নি যে মহিলাদের প্রতি অবিচার হয়েছে বা মহিলারা ভোটে বেরোতে পারবে না। আগে সেটি দেখানোর জন্য মানবাধিকার কমিশনকে বলেন বিচারপতি।

একইসঙ্গে বিচারপতি এও স্মরণ করিয়ে দেন, মহিলাদের উপর নির্যাতন সবথেকে বেশি হয় দিল্লিতে। এটি পশ্চিমবঙ্গ। এদিকে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও ভোটারদের স্বার্থে উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেন, মানবাধিকার কমিশন যদি আসে, তাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সমস্যা কোথায়?

রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে সংশয় প্রকাশ করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করছে। রাজ্যের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের শাসক দলের রাজ্যের প্রতি নিজস্ব মেরিট ও ডিমেরিট রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বা কোনও সংস্থা কোনও প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে কি না, সেটিও দেখতে হবে।’

বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য পাশাপাশি এও বলেন, কমিশন যে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, সেটি মাথায় রাখতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান যেন রাজনীতির অঙ্গ না হয়ে যায়। এবং সেটি যাতে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না হয়, সেটিও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘যদি এমন কিছু নাই ঘটে, তাহলে মিডিয়া রিপোর্ট দেখে কি পদক্ষেপ করা যায়? এমন হলে মানবাধিকার কমিশনকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন দৃষ্টান্ত তৈরি হয়ে যাবে। অতীতের ঘটনা দেখিয়ে একটি রাজ্যের গায়ে কি ছাপ ফেলে দেওয়া যায়?’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours