সাংহাই কো-অপারেশনের বৈঠক শেষে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে ধুয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন পাক বিদেশমন্ত্রী ভুট্টোকেও। ভুট্টোকে 'জঙ্গি ইন্ডাস্ট্রির মুখপাত্র' বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
India-Pakistan: 'জঙ্গি ইন্ডাস্ট্রির মুখপাত্র', ভারতে আসা পাক বিদেশমন্ত্রীকে নিশানা জয়শংকরেরএস জয়শংকর ও বিলাওয়াল ভুট্টো
নয়া দিল্লি: সাংহাই কো-অপারেশনের (SCO) সদস্য রাষ্ট্রগুলি শুক্রবার বৈঠকে বসেছিল গোয়ায়। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশনের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ভারতে এসেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও (Bilawal Bhutto)। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে ভারতের মাটিতে এসেছেন ইসলামাবাদের কোনও বিদেশমন্ত্রী। আর সেই সময়েই কাশ্মীরের পুঞ্চে জঙ্গিনিধন অপারেশনে পাঁচ সেনা জওয়ানের মৃত্যু। এমন অবস্থায় সাংহাই কো-অপারেশনের বৈঠক শেষে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে নিশানা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর (S Jaishankar)। কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন পাক বিদেশমন্ত্রী ভুট্টোকেও। ভুট্টোকে ‘জঙ্গি ইন্ডাস্ট্রির মুখপাত্র’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। একইসঙ্গে এও স্পষ্ট করে দিলেন যে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চায় না ভারত।
গোয়ায় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে এস জয়শংকর বললেন, ‘যাঁরা সন্ত্রাসবাদের শিকার, তাঁরা কখনও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে এমন কারও সঙ্গে আলোচনায় বসে না যাঁরা সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়।‘ জয়শংকরের স্পষ্ট কথা, ‘সাংহাই কো-অপারেশনের সদস্য রাষ্ট্রের বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ভুট্টো জারদারি এখানে এসেছেন। এটি বহুপাক্ষিক কূটনীতির একটি অংশ। আমরা বিষয়টিকে এর থেকে বেশি কিছু দেখছি না।’ উল্লেখ্য, এদিন সাংহাই অপারেশনের বৈঠকের সময় দুই পড়শি দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়নি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের আর্থিক দুর্দশা নিয়েও মন্তব্য করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের বিশ্বাসযোগ্যতা তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চেয়েও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।’ উল্লেখ্য, পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা এখন এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যে তাদের এখন এই দেশ-ওই দেশের দুয়ারে দুয়ারে ঋণের জন্য ঘুরতে হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বার বার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সুর চড়িয়েছে দিল্লি। বিভিন্ন সময়ে ভারত প্রমাণ দেখিয়েছে, এদেশে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলাগুলির সঙ্গে পাকিস্তান জড়িয়ে রয়েছে। যেমন রাষ্ট্রসংঘের তালিকায় থাকা সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহার, ২৬/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সৈয়দ সহ অনেক জঙ্গি নেতা পাকিস্তানের মাটিতে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১২ বছর পর ভারতের মাটিতে এসেছেন পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী। এর আগে ২০১১ সালে তৎকালীন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার শেষবার ভারতে এসেছিলেন। আর ইসলামবাদ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ শেষবার ভারতে এসেছিলেন ২০১৬ সালে। তিনি ছিলেন সরতাজ আজিজ। তারপর থেকে এই প্রথম এ দেশে আসলেন পাকিস্তানের কোনও মন্ত্রী।
এদিন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন জয়শংকর। সন্ত্রাসবাদের ইস্যু থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা সাংহাই কো-অপারেশনের উচিত নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোনও দেশকে বা কোনও ব্যক্তিকে কারও পিছনে আড়ালে থাকার সুযোগ দেওয়া কখনও উচিত না। যখন গোটা বিশ্ব কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিল, তখনও সন্ত্রাসবাদ নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। এই বিপদের থেকে নজর ঘুরিয়ে রাখলে আমাদের নিরাপত্তা জন্য তা ক্ষতিকর হবে।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours