গ্রেফতার হলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় পরিচালক পীযূষ সাহা। ২০লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
Breaking: বীরভূমের ছেলেকে 'হিরো' বানানোর প্রতিশ্রুতি! ২০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে ধৃত টলি-পরিচালকগ্রেফতার টলি-পরিচালক
বিহঙ্গী বিশ্বাস
গ্রেফতার হলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় পরিচালক পীযূষ সাহা। ২০লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘হিরো বানানোর’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বীরভূমের রামপুরহাটের বাসিন্দা অক্ষয় গুপ্তের কাছ থেকে ২০লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। যদিও বেশ কিছু সময় অতিক্রান্ত হলেও সেই ছবি আর হয়নি। এর পরেই ২০২২ সালে পরিচালকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন অক্ষয়। সেই এফআইআরের ভিত্তিতেই গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন তিনি। জামিনের আবেদন করলেও তা আপাতত খারিজ করেছে আদালত।
কে এই পীযূষ সাহা?
টলিপাড়ার জনপ্রিয় পরিচালক তিনি। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে জিৎ… কাজ করেছেন তাঁর ছবিতে। তাঁর ছবি ‘কেল্লাফতে’র মধ্যে দিয়েই টলিউডে ডেবিই হয় অঙ্কুশ হাজরার। অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীরও বড়বেলায় ডেবিউ তাঁর হাত ধরেই। এ ছাড়াও ‘নীল আকাশের চাঁদনী’, ‘রাজু আঙ্কল’-এর মতো জনপ্রিয় ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি।
অক্ষয়ের বয়ানে…
পীযূষ সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বীরভূমের রামপুরহাটের ছেলে অক্ষয় গুপ্ত। টিভিনাইন বাংলা যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গেও। তাঁর কী অভিযোগ তা তুলে ধরা হল তাঁরই বয়ানে। অক্ষয়ের কথায়, “মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি। আমার বাবা মারা গিয়েছেন ছোটবেলায়। কুড়ি লক্ষ টাকা হুট করে বের করে দেওয়া আমার মতো পরিবারে সম্ভব নয়। কিন্তু আমি দিয়েছিলাম। বিশ্বাস করেছিলাম স্যরকে। পরিচালক পীযূষ সাহার কাছে আমি বেশ কিছুদিন ক্লাস করেছিলাম অভিনয়ের। উনি আমায় বলেন, আমার মধ্যে প্রতিভা আছে, অঙ্কুশ-সোহমের ওঁর হাত ধরেই জার্নি শুরু, আমাকেও উনি লঞ্চ করবেন। বলেন, আমাকে নিয়ে একটা ছবি বানাবেন। আমিও বিশ্বাস করি। ছবির বাজেট ঠিক হয় ১ কোটি। উনি বলেন, এর মধ্যে আমাকে ৫০ লক্ষ দিতে হবে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। গ্রামের ছেলে, এ শহরের কিছুই জানি না। উনি বলেন, এভাবেই নাকি কাজ হয় এখানে। আমিও বিশ্বাস করি। অনেক কষ্ট করে আসতে আসতে টাকা দিতে শুরু করি। এটা ২০১৯ সালের ঘটনা। এর পর সময় কেটে যেতে থাকে, উনি সমানে বলেন, হবে, ছবি হবে। কিন্তু ছবি আর হয় না। এরই মধ্যে চলে আসে করোনা, লকডাউন। সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়। উনিও আমার ফোন ধরা কমিয়ে দিতে থাকেন। আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, আমি বুঝতে পারছিলাম যা হচ্ছে তা ঠিক না। তাও স্যরকে বিশ্বাস করেছিলাম যে উনি আমায় ঠকাবেন না। দেখতে দেখতে ২০২২ এসে যায়। আমার মায়ের হঠাৎ ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যানসারের খরচ তো কম নয়, আমি ওঁকে হাতজোড় করে অনুরোধ করতে থাকি, হিরো হওয়ার দরকার নেই, আমার কিছু টাকা যেন তিনি অন্তত দিয়ে দেন। উনি ‘হ্যাঁ’ বললেও সেই টাকা আর দেননি। বাধ্য হয়েই ২০২২-এর শেষে আমি এফআইআর করি। আর অবশেষে উনি গ্রেফতার হন। আমি গ্রামের ছেলে, অনেক আশা নিয়ে এ শহরে এসেছি। এরকমটা যে হতে পারে আমি ভাবতেও পারিনি। আইন ব্যবস্থার উপর আমার আস্থা রয়েছে। আশা করছি, সুস্থ ও সঠিক বিচার পাব।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours