ধূপগুড়ি ব্লকের মাগুরমারি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের পূর্ব আলতাগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি হেলথ অফিসার হিসাবে কর্মরত অবিস্মিতা। ১৪ বছরের পেশাগত জীবনের সেরা স্বীকৃতি পেলেন তিনি। জুন মাসের মাঝামাঝি দিল্লিতে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু।
Dhupguri Nurse: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অতিমারিতে কোভিড রোগীদের সেবা, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল পুরস্কার পাচ্ছেন ধূপগুড়ির নার্সধূপগুড়ির নার্স অবিস্মিতা
ধূপগুড়ি: ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির কমিউনিটি হেলথ অফিসার অবিস্মিতা ঘোষ। এই নিয়ে টানা তিনবার ধূপগুড়ির মেয়েরা সর্বভারতীয় এই সম্মান পেলেন। মঙ্গলবার ভারতীয় নার্সিং ফেডারেশনের প্রকাশ করা তালিকায় দেশের মোট ১৫ জন এই স্বীকৃতি পেয়েছেন। এর মধ্যে এ রাজ্য থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছে ২০২২ সালের ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন ধূপগুড়ির অবিস্মিতা ঘোষ। করোনা অতিমারিতে যখন গোটা বিশ্ব ত্রস্ত ছিল সে সময় দাঁড়িয়ে নিজেকে ঘরবন্দি না রেখে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবিস্মিতা ঘোষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে গিয়েছেন। সেই খবরও তুলে ধরেছিলাম আমরা। তার পরেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং রাজ্য সরকারের নজরে আসে অবিস্মিতার নিরলস কর্মযজ্ঞের কাহিনি। এ বার তিনি পেলেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এই পুরস্কার তুলে দেবেন ধূপগুড়ির ওই নার্সের হাতে।
ধূপগুড়ি ব্লকের মাগুরমারি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের পূর্ব আলতাগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি হেলথ অফিসার হিসাবে কর্মরত অবিস্মিতা। ১৪ বছরের পেশাগত জীবনের সেরা স্বীকৃতি পেলেন তিনি। জুন মাসের মাঝামাঝি দিল্লিতে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু। ২০০২ সালে জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজে ভূগোল অনার্সের পড়া ছেড়ে জিএনএম ট্রেনিংয়ে যোগ দেন অবিস্মিতা। ২০০৫ সালে প্রশিক্ষণ শেষের পর ২০০৯ সালে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। টানা ১০ বছর সফল ভাবে নার্সিং করার পর ২০১৯ সালে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে যোগ দেন কমিউনিটি হেলথ অফিসার পদে। আশাকর্মী থেকে স্বাস্থ্যকর্মী সকলকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের টিকাকরণের চেহারা বদলে দিয়েই মিলেছে দেশের সেরা নার্সের স্বীকৃতি। অবিস্মিতার স্বামী স্কুল শিক্ষক। দুই সন্তানও রয়েছে তাঁর। পরিবার সামলেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন তিনি।
দেশের সেরা নার্সের সন্মান লাভের পর অবিস্মিতা ঘোষ বলেছেন, “আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত। আমি ভাবতেই পারিনি অত বড় সম্মান আমি পাব। আমার এই সম্মানের জন্য আমার স্বাস্থ্য দফতর, আমার সহকর্মী এবং পরিবারের অবদান রয়েছে।” অবিস্মিতা আরও বলেছেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পর কলেজ ছেড়ে ট্রেনিংয়ে গিয়েছিলাম একটা নিশ্চিত সরকারি চাকরির ভাবনা থেকে। কাজে যোগ দেওয়ার পর বুঝতে শিখি নার্সিং শুধুমাত্র কোনও পেশা নয়। একজন মানুষের জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানের ফারাক টুকু গড়তে পারেন একজন দক্ষ নার্স। সেই ভাবনা থেকেই ১৪টা বছর পেরিয়ে গেল। এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর মনে হচ্ছে লড়াই বিফলে যায়নি।”
ধূপগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং বলেছেন, “আমাদের শহরের মেয়ে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাবে। আমরা দারুণ খুশি। আমরা দেখেছিলাম যে লকডাউনের সময় তাঁর নিরলস পরিষেবা দেওয়া। নিজে অন্তঃসত্ত্বা হয়েও করোনা আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে গিয়েছেন। আমরা তাঁকে সম্বর্ধনা দেব।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours