আজ মামলার নথি হাতে পেয়েই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানতে চান মামলাকারীর পরিচয়। অনিন্দ্য সুন্দর দাসের আইনজীবী উত্তর দিয়ে জানান যে, যিনি মামলা করেছেন তিনি একজন আইনজীবী। বিচারপতি প্রশ্ন করেন এই মামলা কীসের ভিত্তিতে করা হয়েছে?

High Court: 'পরিবার মামলা করতে চায় কি না আগে জানুন', কালিয়াচকে নাবালিকা খুনে মামলা ফেরালেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিভরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম (নিজস্ব চিত্র)
কলকাতা: মালদার কালিয়াচকে নাবালিকা মৃত্যুর ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে গিয়ে আদালতের তোপের মুখে মামলাকারী আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত ও নির্যাতিতার পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের দাবিতে মামলা দায়ের করেন তিনি। সোমবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তখনই তোপ দাগেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। শেষমেশ মামলা প্রত্যাহার করে নেন মামলাকারী অনিন্দ্য সুন্দর দাস।


আজ মামলার নথি হাতে পেয়েই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানতে চান মামলাকারীর পরিচয়। অনিন্দ্য সুন্দর দাসের আইনজীবী উত্তর দিয়ে জানান যে, যিনি মামলা করেছেন তিনি একজন আইনজীবী। বিচারপতি প্রশ্ন করেন এই মামলা কীসের ভিত্তিতে করা হয়েছে? উত্তরে মামলাকারী অনিন্দ্য সুন্দর দাসের আইনজীবী বলেন যে, সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই মামলা করা হয়েছে। এরপরই মামলাকারীর উদ্দেশ্যে তোপ দাগেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সওয়াল করেন, মামলাকারী আগে ঘটনাস্থলে যান। এলাকা পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করুন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলুন। আদৌ পরিবার মামলা চায় কি না দেখুন। তারপর মামলা করুন। এখানে বসে থেকে এই মামলা করা যায় না। এরপর আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস এই মামলা প্রত্যাহার করে নেন।

ঘটনার বিবরণ


প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার কালিয়াচকে বছর বারো কী তেরোর এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয় মাঠের পাশ থেকে। প্রথমে তা দেখতে পান এলাকাবাসী। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতার করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান যে, ধৃত যুবকের সঙ্গে ন’দিন আগে (মৃত্যুর ঘটনার) ফোন মারফত যোগাযোগ হয় ওই নাবালিকার। দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর মেয়েটি অভিযুক্তকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক তা নাকচ করে দেয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই যুবক বিবাহিত। তার দুই সন্তানও রয়েছে। বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়ার কারণে সে নির্যাতিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। এরপর নিজের বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিমি দূরে ফেলে রেখে আসে।

এই ঘটনায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের (NCPCR)চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো মালদা জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি পাঠিয়েছেন।চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে পাঠানোর জন্য বলেছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই রিপোর্ট তলব করে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। ঘটনার এফআইআর কপি,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, ওই বালিকার বয়সের সার্টিফিরেট,কীভাবে তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে গিয়েছিল,সেই সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours