DA Protest: ডিএ মঞ্চে উপস্থিত এক আন্দোলনকারী বলেন, "দিদি যদি ১২ বছর চোর-ডাকাতদের সঙ্গে কাজ করে বিশ্বশ্রী নিয়ে আসেন আমি সেই চোর-ডাকাতদের দলেই। আমরা যোগ্যতা নিয়ে চাকরি করছি। উনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কীভাবে রাজ কর্মচারিদের চোর-ডাকাত বলতে পারেন? কাদেরকে কী বলতে হয় জিভে আটকালো না?"
DA Protest: পথই পথ দেখাবে, পথ আপনারা ছাড়বেন না, ডিএ মঞ্চে বললেন শুভেন্দুশুভেন্দু অধিকারী মঞ্চে।
কলকাতা: বুধবার ধরনা মঞ্চ থেকে ডিএ (DA) আন্দোলনকারী তথা রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ‘চোর-ডাকাত’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পরই তাঁর তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সকলেই একযোগে আক্রমণ করেন মমতাকে। এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার পথে নামবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে শুরু হবে মিছিল। প্রত্যেকে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ করবেন।
ডিএ মঞ্চে উপস্থিত এক আন্দোলনকারী বলেন, “দিদি যদি ১২ বছর চোর-ডাকাতদের সঙ্গে কাজ করে বিশ্বশ্রী নিয়ে আসেন আমি সেই চোর-ডাকাতদের দলেই। আমরা যোগ্যতা নিয়ে চাকরি করছি। উনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কীভাবে রাজ কর্মচারিদের চোর-ডাকাত বলতে পারেন? কাদেরকে কী বলতে হয় জিভে আটকালো না?” ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারী বলেন, “আমাদের চোর-ডাকাত বলার যোগ্য জবাব পাবেন আজ। উনি আমাদের প্রতি অশালীন মন্তব্য করেছেন। ওনার রাজ্যের কর্মচারিরা চোর-ডাকাত হলে উনি তো পুলিশ মন্ত্রী। আমাদের গ্রেফতার করছেন না কেন? কারা চিরকূটে চাকরি পেয়েছে এক্ষুনি প্রকাশ করুন।” সরকারি আরও এক কর্মী বললেন, “উনি শিক্ষকদের, সরকারি কর্মীদের চোর-ডাকাত বলে আখ্যা দিয়েছেন। ভারতে তো এত মুখ্যমন্ত্রী আছে কেউ কখনও এমন মন্তব্য করে? আমাদের রুচিতে বাধছে এর উত্তর দিতে।”
মুখ্যমন্ত্রীর চোর-ডাকাত মন্তব্যের পর রীতমত ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে ধরনা মঞ্চ। প্রতিবাদে হাওড়া-শিয়ালদহ থেকে আজ মিছিলে নামবেন সরকারি কর্মীরা। এছাড়াও শহিদ মিনারে সমাবেশ হবে। এই সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সিপিএম-এর অন্যান্য নেতৃত্ব আসবেন। প্রসঙ্গত, গতকাল ধরনা মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করে বলেন, “যে চোর ডাকাতগুলো চিরকুটে চাকরি পেয়েছিল সব গিয়ে ডিএ-র ওখানে বসে রয়েছে। তাঁদের কাছে আমায় জ্ঞান শুনতে হবে? সব চোর-ডাকাত।”
সংগ্রামী যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, আমাদের আন্দোলন নিয়ে প্রচার করতে হবে।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে মামলা করবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয়বাহিনী দিয়ে ভোট না করালে আমরা ভোট করতে বাধ্য নই। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া এ রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীরা ভোটের ডিউটিতে যাবে না।
‘চোর-ডাকাত’ মন্তব্যে ধিক্কার দিবসের ডাক সংগ্রামী যৌথমঞ্চের। ৬ এপ্রিল কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে তারা। এরপর ফের ধর্মঘটের ডাক।
শুভেন্দুর কথায়, এই সরকার দেউলিয়া। ৬ লক্ষ কোটি টাকার দেনা আছে। সরকার আপনাদের ডিএ আটকানোর জন্য আইনজীবীদের পিছনে খরচ করেছে। এই লড়াইয়ে বিকাশবাবুরা যেমন আছেন, তেমন আমরাও আছি। পথই পথ দেখাবে। পথ আপনারা ছাড়বেন না। আপনারা পরিবর্তনের অভিমুখ।”
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রেড রোডের আওয়াজ বেড়ে গিয়েছে। দিন শেষ হয়ে এসেছে। আপনাদের মেরুদণ্ড যে বিক্রি নেই তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আমার সামনে ক্যাবিনেটে ৬ লক্ষ স্থায়ী পদের অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এ কাজ করেছেন। এসএসসি পাঁচটা জোনে ভাগ ছিল। সেটাকে কালীঘাট কেন্দ্রিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
অশোক লাহিড়ি বলেন, এটা ঘোষণার সরকার। “মুখ্যমন্ত্রী যে বলছেন আমরা সবাই চোর। আমি সরকারি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। দেখলাম সিভিক দিয়ে স্কুলে পড়াবেন। এবার দেখব পিজি হাসপাতালে সিভিক ডাক্তার।”
বাম নেতারা মঞ্চ ছাড়ার পর মঞ্চে আসেন শুভেন্দু অধিকারী, অশোক লাহিড়িরা।
মহম্মদ সেলিম বলেন, রেড রোডে যে তামাশা চলছে তার প্রতি ধিক্কার জানাতে এসেছি।
জয়ললিতা এরকম একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। জয়ললিতা নেই। সরকারি কর্মচারীরা আছেন। এটাই ইতিহাস, বলেন বিকাশরঞ্জন।
তদন্তকে বিভ্রান্ত করতে পরিকল্পিতভাবে বিচারপতি, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে, বলেন বিকাশরঞ্জন। তিনি বলেন, ‘দেখব সরকারের কত ক্ষমতা’।
ডিএ আন্দোলনকে কৃষক আন্দোলনের মতো তীব্র করার আহ্বান বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমার চোর-ডাকাতদের বলব সংগঠিত হন। বোঝান ঘেউ ঘেউ করা সরকারি কর্মচারীরা দাবি আদায়ে প্রয়োজনে কামড়ে দিতে পারে।’
দু’টো মিছিল একইসময়ে ধর্মতলায় চলে আসায় কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।
হাওড়া এবং শিয়ালদহ দুই জায়গা থেকে আসা সরকারি চাকুরীজীবীদের মহামিছিল বেলা দেড়টা নাগাদ ডরিনা ক্রসিংয়ে পৌঁছয়। একইসঙ্গে এসে পড়ে দু’টি মিছিল। এরপরই শিয়ালদহের দিকের মিছিলের আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
শিয়ালদহ ও হাওড়ায় শুরু সরকারিদের জমায়েত।
ওড়াতেও বিপুল জমায়েত হয়েছেন। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “পাগলের কথায় উত্তর দিতে চাই না। ওনার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন।”
শিয়ালদহে উপস্থিত এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমাদের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পথে নেমে আন্দোলন করছেন। উনি যে ভাষায় আমাদের আক্রমণ করেছেন আমরা বলতে পারি যাঁরা যে মতাদর্শে বিশ্বাসী তাঁরা সেই ভাষায় কথা বলবেন।”
বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর সরকারি কর্মচারি এসে উপস্থিত হয়েছেন শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে
Post A Comment:
0 comments so far,add yours