শনিবার সাত সকালে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় কৌস্তভ বাগচীকে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi) গ্রেফতার হওয়ায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। ইতিমধ্যে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে তারা। দলের তরফে কৌস্তভের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তবে শুধু কংগ্রেস নয়, বামেদের তরফেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে আইনজীবীর গ্রেফতারি নিয়ে। অন্যদিকে, কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান তৃণমূলের। শাসক শিবিরের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন ওই আইনজীবী, তাতে সঠিক শাস্তিই দেওয়া হয়েছে তাঁকে
সর্বোতভাবে কৌস্তভের পাশে থাকার কথাও বলেছেন তিনি। অধীর বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলার মানে এটা নয় যে উগ্রপন্থীর মতো বাড়ি ঘেরাও করতে হবে, অমানবিক আচরণ করে তাঁকে তুলে নিয়ে যেতে হবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অধীর বলেন, ‘আপনি বলে দিন আপনার সমালোচনা করা যাবে না। শুধু আপনিই সমালোচনা করতে পারবেন। আইন করে দিন আপনি। নিজেকে স্বৈরাচারী ঘোষণা করে দিন।’
এই ঘটনাকে সঠিক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেই কৌস্তভ দলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছিলেন। আর এবার দলকে খুশি করার জন্য যে অশোভনীয় কাজ করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে যেভাবে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রশাসন যেটা মনে করেছে, সেটা সমোয়চিত ও সঠিক পদক্ষেপ বলে মনে করি।’
তাঁর দাবি, দলের কাছে নম্বর বাড়বে বলেই নাকি মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র কৌস্তভ। শান্তনুর কথায় ‘কৌস্তভ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য়।’
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বর্ষীয়ান বাম নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে পুলিশি রাজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা চলছে।’ তাঁর মতে, কৌস্তভ যা বলেছেন, তাতে যদি আপত্তিও থেকে থাকে তাহলে পাল্টা কথা বলে তাঁর বিরোধিতা করা যেতে পারে। কিন্তু গ্রেফতারি সঠিক নয়। স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘মমতার এত আতঙ্ক কেন কৌস্তভ একজন আইনজীবী, তিনিও যদি কথা বলতে না পারেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কী করে বলবে?’
সাগরদিঘি নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরীকে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তারই পাল্টা বক্তব্য রেখেছেন কৌস্তভ বাগচী। বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘কেউ যদি কোনও তথ্য জানে, গোপন কথা জানে তাঁর বলে দেওয়া উচিত। শুধু গিমিক দিয়ে তো কোনও লাভ নেই। এই কাদা ছোড়াছুড়ি একদম ঠিক নয়। ‘
উল্লেখ্য, কৌস্তভের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্ররোচনা, বিদ্বেষমূলক ও অপমানজনক মন্তব্যের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours