ভারতে তার ইউজারদের জন্য একটি গাইড নিয়ে হাজির হয়েছে। সেই ইউজার গাইডে রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ প্রতারণা থেকে শুরু করে ভুল তথ্য ধরে ফেলার একাধিক কৌশল। সেগুলি জেনে নিন।

গত মঙ্গলবার, 7 ফেব্রুয়ারি সেফার ইন্টারনেট ডে (Safer Internet Day) বা নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস পালন করেছে বিশ্ব। চলতি বছরে সেফার ইন্টারনেট ডে-র থিম ছিল ‘এই বিষয়ে কথা বলতে চান? অনলাইন জীবন সম্পর্কে কথোপকথনের জন্য জায়গা তৈরি করা।’ কিন্তু, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সত্যিই কি আমরা সুরক্ষিত? যে ভাবে অনলাইন স্ক্যামাররা ওঁত পেতে রয়েছে, ইন্টারনেট জীবন কি আমাদের জন্য সুখকর? এই মুহূর্তে দেশে সবথেকে বেশি পরিমাণে যে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আমরা ব্যবহার করি, তার নাম WhatsApp। সেই হোয়াটসঅ্যাপ কিন্তু বরাবরই গ্রাহকের ডিজিটাল সুরক্ষা নিয়ে ভাবিত। বিভিন্ন সেফটি টুলের মাধ্যমে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে WhatsApp।


কিন্তু, তারপরেও তো WhatsApp-এ ভুয়ো মেসেজের আনাগোনা চলতেই থাকে। সেই সব ভুয়ো মেসেজে থাকে ভুল তথ্য, যা আসলে হ্যাকারদের কারসাজি। সামান্য ভুলে কোনও একটা লিঙ্কে ক্লিক করে ফেললেই সর্বনাশ, সব শেষ। WhatsApp ভারতে তার ইউজারদের জন্য একটি গাইড নিয়ে হাজির হয়েছে। সেই ইউজার গাইডে রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ প্রতারণা থেকে শুরু করে ভুল তথ্য ধরে ফেলার একাধিক কৌশল। বর্তমান জীবনে ডিজিটাল জীবনযাপনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানাবিধ অনলাইন সমস্যার সমাধান আপনি এখানে পেয়ে যাবেন। দেখে নিন:-

1) ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা: ইদানিংকালে আমরা অনলাইনে যে পরিমাণে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলেছি, তাতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা বজায় রাখাও অত্যন্ত জরুরি। আপনার বাড়ির ঠিকানা থেকে শুরু করে ফোন নম্বর, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের নম্বর এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মতো একাধিক সংবেদনশীল তথ্য কখনও কারও জন্য শেয়ার করবেন না। WhatsApp গ্রাহকরা তাঁদের নানা ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ (Control Personal Details) করতে পারেন। যেমন, প্রোফাইল পিকচার, লাস্ট সিন, অনলাইন স্টেটাস, অ্যাবাউট স্টেটাস এবং কে সেই স্টেটাস দেখছেন- এভরিওয়ান, কন্ট্যাক্টস ওনলি, সিলেক্ট কন্ট্যাক্ট অথবা নো-ওয়ান ইত্যাদি একাধিক পদ্ধতির মধ্যে নিজেদের প্রোফাইলের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন। এর পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে আপনি নিজের অনলাইন উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যার সাহায্যে আপনি যদি চান, তাহলে আপনি অনলাইনে এলেনও আপনাকে কেউ দেখতে পাবে না।

2) অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর: আপনার WhatsApp অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য অতিরিক্ত স্তর যোগ করতে পারেন। রয়েছে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের (Two-Step Verification) মতো দুর্দান্ত ফিচার, যা আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর যোগ করে। আপনি যদি পুরনো ফোন বদলে আপনার নতুন ফোনে পুনরায় WhatsApp অ্যাকাউন্টটি সেট করতে চান, তাহলে তা যাচাই করার সময় ছয় অঙ্কের পিন প্রয়োজন হবে। যদি আপনার ফোন চুরি হয়ে যায়, তাহলে সেই সিম কার্ড থেকে একই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ চালাতেও এই প্রক্রিয়া খুব সাহায্য করবে।

3) মেসেজ ফরোয়ার্ডের বিশেষ লেবেল: WhatsApp-এ ফরোয়ার্ডেড মেসেজগুলির (Forwarded Message) জন্য লেবেল তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জানা যায়, একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ কতবার ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফরোয়ার্ডেড মেসেজেরও লিমিট বেঁধে দিয়েছে। তার মাধ্যমে ফরোয়ার্ডেড মেসেজগুলি একটি মাত্র গ্রুপে একবারই পাঠানো যায়। আগে এই সংখ্যাটাই ছিল 5। এর ফলে, আপনি কোনও মেসেজের সোর্স সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তা ফরয়ার্ড করবেন না।

4) প্রতারণা চিহ্নিত করে রিপোর্ট করুন: চাকরির প্রলোভন হোক বা হোক সে নগদ টাকা জয়ের লোভ বা স্পনসর্ড ট্রিপের প্রলোভন, এই সব কিছুই আসলে প্রতারণার ছক। এই ধরনের স্প্যাম মেসেজের মাধ্যমেই সাইবার হুমকি দিয়ে থাকে স্ক্যামাররা। তাই WhatsApp-এ যেমন মেসেজই আসুক না কেন, তা ক্লিক করার আগে কয়েক বাব ভাববেন, ভাল করে যাচাই করে দেখবেন। তার কারণ এমন অনেক মেসেজই থাকে, যেগুলির ভিতরে লিঙ্কের আকারে ভেকধারী ম্যালওয়ার লুকিয়ে থাকে। আর এই ধরনের ম্যালওয়্যার আপনার গোপনীয়তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। কোনও সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট থেকে যদি এই ধরনের মেসেজ পেতে থাকেন, তাহলে সেই অ্যাকাউন্টটি ব্লক অ্যান্ড রিপোর্টও (Block And Report Account) করতে পারেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours