সোমবার আরামবাগের সালেপুর সন্তোষ সাধারণ বিদ্যাপীঠে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক চলছিল। স্কুলের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় বৈঠক।

টাকার বিনিময়ে শিক্ষিকাকে হাজিরা খাতায় সই করতে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগকে কেন্দ্র করে তুমুল বাক বিতণ্ডা। হুগলির আরামবাগের (Arambag) সালেপুর সন্তোষ সাধারণ বিদ্যাপীঠে এই অভিযোগ ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, স্কুলে না এসেও শিক্ষিকা হাজিরার খাতায় সই করেছেন। এর বদলে প্রধান শিক্ষককে টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকে তুমুল বাদানুবাদ হয়। অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে যান না। তিনি প্রধান শিক্ষককে গোপনে টাকা দিয়ে হাজিরা খাতায় সই করেন। সূত্রের দাবি, ম্যানেজিং কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য, স্কুলের অন্য শিক্ষক ও আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন করেন। এরপরই হেড স্যরের সঙ্গে বচসা চরমে ওঠে। হাতাহাতির উপক্রম হয়। প্রধান শিক্ষক অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং তাঁর দাবি, ফাঁসানো চক্রান্ত করা হচ্ছে তাঁকে।



সোমবার আরামবাগের সালেপুর সন্তোষ সাধারণ বিদ্যাপীঠে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক চলছিল। স্কুলের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় বৈঠক। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে তখন। হঠাৎই স্কুলের ভিতর থেকে তুমুল হইচইয়ের শব্দ শোনা যায়। তারস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে আসে স্কুল থেকে। অভিযোগ, পরে জানা যায়, সে সময় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলছিল প্রধান শিক্ষকের। এলাকার লোকজনের কেউ কেউ বলেন, স্কুলের ভিতর থেকে ‘চোর, চোর’ ধ্বনিও শুনতে পান তাঁরা।

যে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তিনি কার্যত তা স্বীকারও করে নিয়েছেন। ওই শিক্ষিকা বলেন, “আমি ওনাকে বলেছিলাম ছুটিগুলি অ্যাডজাস্টের জন্য কি ম্যানেজিং কমিটি কে বলব? আমি বলেছিলাম, সেরকম হলে আমি যদি স্কুলের ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে কিছু টাকা পয়সা দিই। ওনারা যদি আমাকে ছাড় দেন। কারণ আমার শারীরিক অসুস্থতার জন্য অনেকটা ছুটি গিয়েছে। উনি বলেছিলেন, ‘এসবের দরকার নেই, আমাকে বলবেন, আমি করে দেব’। টাকা পয়সার কথা জিজ্ঞাসা করায় উনি বলেন, ‘আমাকে দেবেন’। এরপর উনি আমাকে রেজিস্ট্রেশনের খাতাও দেন। উনি সবই জানতেন।”





যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, “কোনও অ্যাটেনেডন্স জাল করিনি আমি। আমার স্টাফ সেটা করেছে। একটা হোয়াইটনার মারে। পরে আমি জানতে পারি। সই তিনি নিজে করেছেন। হিসাব করতে চেয়েছেন, ওনাকে খাতা দেওয়া হয়েছে। উনি খাতা নিয়ে ট্যাম্পারিং করবেন আমি তো জানি না। এখন আবার বলছে খাতা বাড়ি নিয়ে গিয়েছিল।” বৈঠকে ছিলেন আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “আমি এরকম কিছু জানতামই না। পরে জানলাম এটা দীর্ঘদিনের ঘটনা। কে দোষী, কে নির্দোষ, আলাপ আলোচনা চলছে। একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে কোনও দাগ না লাগে সেটা দেখা হবে।”

অভিযোগ, স্কুলে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অর্থের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক নাকি স্কুলেরই এক শিক্ষিকাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দিয়েছেন। ওই শিক্ষিকা নিজেও তা স্বীকার করেছেন। যদিও প্রধান শিক্ষক এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এমনকি ঐ শিক্ষিকা নিজেও স্বীকার করেছেন যে তিনি এই ভাবেই হাজিরা খাতায় সই করেছেন। তার বিনিময়ে তিনি প্রধান শিক্ষক কে প্রচুর অর্থ দিয়েছেন। আর এই নিয়েও শিক্ষক রাও বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours