এক দশক ধরে সুখে সংসার করেছিলেন। দুই সন্তানও আছে। কিন্তু, কখন কার মনে কীভাবে বসন্ত আসে, তা কে বলতে পারে?
স্বামী প্রমোদ দাসের সঙ্গে এক দশক ধরে সুখে সংসার করেছিলেন। তাঁদের দুই সন্তানও আছে। কিন্তু, কখন কার মনে কীভাবে বসন্ত আসে, তা কে বলতে পারে? আচমকা স্বামীর ছোট বোনের প্রেমে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন বিহারের সমস্তিপুরের শুক্লা দেবী। কে কী ভাবল, এই ভাবনার জালে আটকে না থেকে, ১৮ বছরের সোনি দেবীকে বিয়েও করেছেন তিনি। ভেঙে দিয়েছেন স্বামী-দুই বাচ্চা নিয়ে তাঁর ‘সুখে’র বছরের সংসার। এই প্রসঙ্গে সাফ বলেছেন, “পতি হুয়া তো কেয়া হুয়া। জাহাঁ প্রেম রাহেগা, ওয়াহিঁ না রাহেঙ্গে। (স্বামী তো কী হয়েছে? যেখানে ভালবাসা আছে, সেখানেই তো থাকব। তাই না?)।” অবিশ্বাস্য হলেও, প্রমোদ দাসও তাঁর স্ত্রী ও বোনের এই অভিনব প্রেম ও বিয়ে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু, বাধ সেধেছে শুক্লা দেবীর শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরা। গত মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় থানায় শুক্লা অভিযোগ করেছেন, তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর জীবনসঙ্গিনীকে ‘অপহরণ’ করেছে। এরপরই প্রকাশ্যে এসেছে এই অভিনব প্রেম কাহিনি।
১০ বছর আগে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন শুক্লা এবং প্রমোদ। কিন্তু মাত্র ছয় মাস আগে তাদের জীবনে চাঞ্চল্যকর মোড় আসে। এক বাড়িতে থাকতে থাকতে কখন স্বামীর ছোট বোন সোনির প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন, বুঝতেই পারেননি শুক্লা। বোঝার পর অবশ্য নিজের ভালবাসা প্রকাশে কোনও সঙ্কোচ করেননি তিনি। খোলাখুলিভাবে, প্রচলিত রীতিনীতির বিরুদ্ধে যেতে ভয় পাননি। প্রমোদের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে সোনিকে বিয়ে করেন শুক্লা। প্রমোদদের বাড়ি ছেড়ে দুজনে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে অন্য এক বাড়িতে একসঙ্গে বসবাস করা শুরু করেছিলেন। শুক্লা বলেছেন, “আমরা একে অপরকে ভালোবাসি বলেই বিয়ে করেছি। বিয়ে করে আমরা খুব সুখিও হয়েছি। আমার মতে হৃদয়ই হল ভালবাসার ঘর। আমরা দুজনেই একে অপরকে হৃদয় দিয়েছি। এটা সত্যিকারের ভালবাসা। সোনি খুব সুন্দর।”
সোনিকে সুখে রাখতে চেষ্টার কসুর করেননি শুক্লা দেবী। শুক্লা দেবী থেকে সরকারিভাবে সুরজ কুমার নাম গ্রহণ করেছেন। শুধু পুরুষ পরিচয় গ্রহণ করাই নয়, তিনি এখন সবসময় পুরুষদের পোশাক পরেন। চুল কেটে ফেলেছেন ছোট করে, পুরুষদের হেয়ারস্টাইলে। লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার করে শারীরিকভাবেও পুরুষ হতে চেয়েছিলেন শুক্লা ওরফে সুরজ কুমার। সোনিকে পুরুষের দেহসুখও দিতে চেয়েছিলেন। এর জন্য সুরজ এবং সোনি দুজনে মিলে ইন্টারনেটে বিস্তর গবেষণাও করেছিলেন। পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু ভিডিয়ো দেখার পর তাঁরা বুঝেছিলেন, বিষয়টা কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে। ভয় পেয়ে সেই পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসেন। সুরজের দাবি, তারপরও তাঁকে স্বামী হিয়েবেই গ্রহণ করেছে সোনি দেবী।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours