প্রসব বেদনা শুরু হওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন স্বামী। মাঝপথে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।


অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন ২৬ বছরের রীশা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর প্রসব বেদনা শুরু হয়েছিল। স্বামী প্রজিত (৩২) তাঁকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গী হয়েছিলেন আরও চার আত্মীয়। কিন্তু, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হাসপাতালে যাওয়ার পথে আচমকা আগুন ধরে যায় তাঁদের গাড়িতে। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের কান্নুর জেলায়। এই ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা জেলায়। ঠিক কী কারণে গাড়িটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।


সূত্রের খবর, কান্নুরের কুত্তিয়াত্তুর কারারম্বু এলাকায় থাকতেন প্রজিত এবং রীশা। এদিন সকালে রীশার প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পর, একটি মারুতি গাড়িতে করে তাঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রজিত। তাঁরা বসেছিলেন গাড়ির সামনের দুই আসনে। পিছনের আসনে ছিলেন আরও চারজন। তাঁদের মধ্যে একটি শিশুও ছিল। গাড়িটিতে আগুন লাগার পরই, প্রজিত হাত বাড়িয়ে পিছনের দরজা খুলে দিয়েছিলেন। পিছনের আসনে থাকা চারজনই গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে পড়েন। কিন্তু প্রজিত ও রীশা গাড়িটির সামনের দরজা খুলতে পারেননি। আগুনের গ্রাসে থাকা গাড়ির ভিতর আটকা পড়েন তাঁরা। কিছু পরে দমকল বিভাগ ও পুলিশের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। চোখের সামনে পুড়ে মৃত্যু হয় প্রজিত ও রীশার।



ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁরা ওই দম্পতিকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, কোনওভাবেই গাড়িটির সামনের দরজাগুলি খোলা যায়নি। ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে গাড়িটিতে আগুনজ্বলছে। গাড়ির ভিতর থেকে প্রজিত এবং রীশা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। স্থানীয় কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের বাঁচাতে ছুটে আসতে। কিন্তু গাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, এই আশঙ্কায় তাঁরা কাছাকাছি যেতে পারেননি, পিছু হটতে বাধ্য হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেছেন, “আমাদের খুব অসহায় লাগছিল। গাড়ির সামনের অংশটি আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে পুড়ে যায়। গাড়ির তেলের ট্যাঙ্কে আগুন পৌঁছলে যে কোনও সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এই আশঙ্কায় আমরা তাদের বাঁচানোর জন্য তেমন কিছু করতে পারিনি।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours