সালের শেষ বা ২০২৪ সালের শুরুতেই সাধারণ নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। সেই নির্বাচনে সার্বিক ভাবে ইভিএম-এ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাই বাস্তবায়িত হবে না বলে জানা গিয়েছে।
ইভিএমে নির্বাচন পরিচালনার পথ থেকে সরে এল বাংলাদেশ। আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালুর পথে হাঁটল না শেখ হাসিনার সরকার। ব্যালটের পরিবর্তে দেশের সাধারণ নির্বাচন প্রক্রিয়া ইভিএমের মাধ্যমে পরিচালনার প্রস্তাব সরকারকে কয়েক মাস আগে দিয়েছিল সে দেশের নির্বাচন কমিশন। ইভিএম কেনা এবং তার মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার জন্য বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। ওই খাতে এখন টাকা খরচ করতে রাজি নয় বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, খাদ্য, চিকিৎসা ও কৃষিকাজে অগ্রাধিকার দিতেই ইভিএম প্রকল্প আপাতত বাতিল করা হল। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সে দেশে শুরু হয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের সর্বোচ্চ সরকারী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক বা ডিসি সম্মেলন। সেই সম্মেলনেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
২০২৩ সালের শেষ বা ২০২৪ সালের শুরুতেই সাধারণ নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। সেই নির্বাচনে সার্বিক ভাবে ইভিএম-এ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাই বাস্তবায়িত হবে না বলে জানা গিয়েছে। এর আগে স্থানীয় কিছু নির্বাচন ইভিএম-এর মাধ্যমে করিয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে ব্যালটের উপরই নির্ভরশীল বাংলাদেশ। সেখানে শুরু থেকেই নির্বাচন হয় ব্যালটে। আগামী সাধারণ নির্বাচনেও তার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ইভিএম এখনই চালু না করার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন লক্ষ্যের ব্যাপারে ওই সম্মেলন থেকে বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রশাসন পরিচালনায় ডিসি-দের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের প্রশংসা করে বলেন, “জনমুখী মনোভাব ও মানুষকে সেবার করার যে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়েছে তা প্রশংসনীয়। আমরা তো জনপ্রতিনিধি। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আসি। মেয়াদ ৫ বছর। আপনাদের (ডিসি) দায়িত্ব অনেক। শুধু চাকরি করা না, জনসেবা দেওয়া। আপনাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছেন।” বিভিন্ন দুর্যোগে ডিসি-দের ভূমিকা প্রসঙ্গে হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশের দুর্যোগে মানুষের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে জণগনের সেবক হিসেবে আপনারা নিজেদের প্রমাণ করেছেন। করোনায় আপনজন পাশে না থাকলেও আপনারা ছিলেন।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। দেশবাসীকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন। উন্নয়নশীল মর্যাদার তকমা ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তাও দেন তিনি। এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কী কী সুবিধা দেশ পাবে, কী কী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তা ঠিক করার জন্য একটা কমিটি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণকে যেন অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলতে পারি, যেটা আমাদের লক্ষ্য।” উন্নয়নকে শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। তবে পয়সার জন্য ভিত্তিহীন প্রকল্পের পথে না হাঁটার পরামর্শ শোনা গিয়েছে মুজিব-কন্যার কথায়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে আলোচনার জন্য ২৪৫টি প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার মতো কিছু বিষয় বেশি গুরুত্ব পাবে এই সম্মেলনে। শেখ হাসিনা ছাড়াও উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এই সম্মেলনে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ডিসিরা।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours