কিন্তু কারা এই পোস্টার লাগাল, তা নিয়ে তাঁরাও সন্ধিহান। এমনকি হাইকোর্টে ঢোকার মুখের রাস্তায় পোস্টার দেখা গিয়েছে।

হোয়ারস্ দ্য জাস্টিস মাই লর্ড?’হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বাড়ির আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে গেল পোস্টার। বিচারপতিকে ঘিরে আইনজীবীদের একাংশের বিক্ষোভে নজিরবিহীন ঘটনা। সোমবার সকালেই হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ। এজলাসের বাইরে গেট আটকে কোর্ট বয়কটের ডাক দেন তাঁরা। একদিকে যখন হাইকোর্টে চলছে বিক্ষোভ, বিচারপতির বাড়ির সামনেও পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নজিরবিহীন ঘটনা কলকাতা হাইকোর্টে।

যোধপুর পার্কে বিচারপতি মান্থার বাড়ির সামনেও পোস্টারে ছয়লাপ। পার্ক থেকে বহুতলের দেওয়ালেও সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে পোস্টার। পোস্টারে লেখা, ‘ডিসঅ্যাগ্রি ইন দ্য নেম অফ জুডিশিয়ারি’ নীচে লেখা, ‘হোয়ারস্ দ্য জাস্টিট মাই লর্ড?’ পোস্টারে নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামও। বিচারপতির বাড়ির আশপাশের বাড়িগুলিতেও পোস্টার পড়েছে। কারা এই পোস্টার লাগিয়েছেন, তা অবশ্য জানা যায়নি।বিচারপতির বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরাও এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সকালে তাঁরা হঠাৎই এই ধরনের পোস্টার দেওয়ালে সাঁটানো দেখেছেন। কিন্তু কারা এই পোস্টার লাগাল, তা নিয়ে তাঁরাও সন্ধিহান। এমনকি হাইকোর্টে ঢোকার মুখের রাস্তায় পোস্টার দেখা গিয়েছে।

অতীতেও কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতিকে বয়কটের ঘটনা ঘটেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। কিন্তু সোমবারের নজির একেবারেই ভিন্ন। হাইকোর্টের সামনেই একজন বিচারপতির নামে পোস্টার সাঁটানোর দৃষ্টান্ত কস্মীনকালে কখনও দেখা গিয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না আইনজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি বাইরে থেকে এজলাসের দরজা দিয়ে দেওয়ার ঘটনাও সাম্প্রতিক সময়ে দেখেননি বলেও মত অনেক আইনজীবীর। তাঁদের বক্তব্য, যদি কোনও বিচারের ক্ষেত্রে সত্যিই অভিযোগ থাকে, তাহলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যায়, এইভাবে বয়কটের অর্থ ঠিক কী? মূলত বিচারপতি মান্থা শুভেন্দু অধিকারীর একটি মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন। কেবল তাই নয়, তিনি এটাও নির্দেশ দিয়েছিলেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে হলে, যেন তাঁর এজলাসেই মামলা করা হয়। তাই নিয়েই বিক্ষোভ।

হাইকোর্টের ঝামেলা মেটাতে সময় বেঁধে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। সমস্যা মিটিয়ে অবস্থান তুলে নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। না হলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, “সমস্যা মিটিয়ে নিন। না হলে পদক্ষেপ করা হবে।” এদিনের অচলাবস্থার মধ্যে ঘণ্টা দুয়েক পরে এজলাসে ফেরেন বিচারপতি মান্থা। কিন্তু কোনও রাজ্য সরকারের আইনজীবী উপস্থিত না থাকার জন্য ফিরে যান। এদিন ৩০৬ টি মামলা শোনার কথা ছিল। কোনও মামলাই শুনতে পারলেন না তিনি।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “আদালতে কী ঘটছে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক কোনও মন্তব্য করব না। কিন্তু অবজারভেশন একটাই। আমরা যখন বলি হাইকোর্টে যাব, আমরা আইনজীবীকে বলি সুপ্রিম কোর্টে যাব, আমরা যেমন আদালতে যাব বলি, কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমি রাজা শেখর মান্থার বেঞ্চে যাব। প্রশ্ন হচ্ছে কোন কারণে আদালতের থেকেই একটি বিচারপতির নাম বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল? তাঁর সুপ্ত মানসিকতায় কী কাজ করছে, সেটা কিন্তু মনোবিদ দিয়ে তদন্ত করা দরকার

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours