শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যতগুলি মামলা দায়ের হয়, তার মধ্যে সবথেকে 'হাই প্রোফাইল' মামলা বোধহয় ছিল এই ববিতা সরকারের মামলা।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ববিতা সরকারের মামলার শুনানি। এদিনই নির্ধারণ হতে পারে আদৌ ববিতা সরকারের চাকরি থাকবে কি না! তৃণমূল বিধায়ক পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার চাকরি থেকে ইস্তফা, আদালতের নির্দেশে সেই চাকরিতে ববিতার বহাল হওয়ার ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা রাজ্যে। কিন্তু তার থেকেও শোরগোল ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে সম্প্রতি। এত ‘লড়াই’ শেষে যে চাকরি ববিতা সরকার পান, আদৌ তিনি সেই চাকরি পাওয়ার যোগ্য কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, ববিতার আবেদনপত্রে প্রাপ্ত নম্বর ঠিক লেখা থাকলেও শতাংশে ভুল আছে বলে অভিযোগ। স্নাতকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলে আবেদনকারী এসএসসি স্কোর বোর্ডে ৮ পয়েন্ট পান। কিন্তু ববিতা ৬০ শতাংশ পাননি বলে অভিযোগ তুলে অনামিকা রায় নামে আরেক প্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ববিতা যদি ৬০ শতাংশের কম নম্বর স্নাতকে পান, তাহলে তাঁর স্কোর কমে ৬ পয়েন্ট হবে। ফলে তাঁর থেকেও যোগ্য প্রার্থীরা উঠে আসবেন এই চাকরির দাবিদার হিসাবে। যেমন উঠে এসেছে অনামিকার নাম।
ববিতা ইতিমধ্যেই অঙ্কিতার ফেরানো প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। অনামিকার মামলা দায়ের হওয়ার পরই সেই টাকা ফিক্স ডিপোজিট করার নির্দেশ দেয় আদালত। মামলার রায় বিপক্ষে গেলে সেই টাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা করতে হবে ববিতাকে। একইসঙ্গে আদালত ববিতার কাছে জানতে চেয়েছে, ৬০ শতাংশ নম্বর না পেয়েও কেন ববিতা তা আবেদনপত্রে লিখলেন? ববিতার আইনজীবীকে আদালতের নির্দেশ, বুলেট পয়েন্ট করে ২ পাতার মধ্যে ববিতার আইনজীবীকে জবাব দিতে হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যতগুলি মামলা দায়ের হয়, তার মধ্যে সবথেকে ‘হাই প্রোফাইল’ মামলা বোধহয় ছিল এই ববিতা সরকারের মামলা। কারণ, ববিতাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রথম চাকরিপ্রাপক। এমনকী প্রাক্তন মন্ত্রীর মেয়েকে সরিয়ে ববিতা সেই চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছিল গোটা রাজ্য। ববিতা হয়ে উঠেছিলেন লড়াকু চাকরি প্রার্থীদের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। সেই ববিতার চাকরিই এবার প্রশ্নের মুখে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই শুক্রবার শুনানি হবে এই মামলার।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours