২৬ জানুয়ারি এবার বসন্ত পঞ্চমী। এদিনই সরস্বতী পুজো। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন এখানে সরস্বতী পুজো করতে চায় এবার।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Presidency University) সরস্বতী পুজো করতে চায় তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন। এদিকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনওই সরস্বতী পুজো হয়নি। এবারও তাতে সম্মতি নেই কর্তৃপক্ষের। শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বক্তব্য, সরস্বতী পুজো করতে দিচ্ছে না প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, অনুমতি না পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে সরস্বতী পুজো করবে তারা। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে কোনও ধর্মাচরণ হয় না। তাই এখানে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। যদিও এই সরস্বতী পুজোকে সামনে রেখে জোর তরজা শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্সিতে। যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্সির রীতিও মাথায় রাখতে হবে। সবদিক বজায় রেখেই সুষ্ঠুভাবে একটা সমাধান পথ বের হোক, চান তিনি। ২৬ জানুয়ারি এবার বসন্ত পঞ্চমী। এদিনই সরস্বতী পুজো। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন এখানে সরস্বতী পুজো করতে চায় এবার। এ নিয়ে ডিন অব স্টুডেন্টসকে চিঠিও লিখেছে তারা। তারা আর্জি জানিয়েছে, ২৫ জানুয়ারি রাতভর তারা পুজোর আয়োজন করতে চায়। রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত মণ্ডপ সাজানোর অনুমতি চাওয়া হয় ওই আবেদনপত্রে। একইসঙ্গে ২৬ জানুয়ারি পুজোর স্থল খুলে রাখা, ২৭ জানুয়ারি বিসর্জনের ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়েরও উল্লেখ করা হয় ওই চিঠিতে।



সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এখনও এই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহসভাপতি ও প্রেসিডেন্সির রাজ্যের দলীয় কোঅর্ডিনেটর প্রান্তিক চক্রবর্তী বলেন, “প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতি স্যরকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল সরস্বতী পুজোর অনুমতি চেয়ে। প্রেসিডেন্সির বুকে এই পুজো নির্বাচিত ছাত্র সংগঠন করে না। আমাদের সংগঠনের ছাত্র ছাত্রীরা তা করতে চেয়েছিল। তিনি মৌখিকভাবে না করার কথা বলে দেন। আমি পুজো করতে চাই। পুজো করব। আমাদের ছাত্র সংগঠন সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের জন্য পুজো করবে। আমরা বারবার আবেদন করে চিঠি পাঠাচ্ছি। শেষমেশ যদি অনুমতি না মেলে গেটের সামনে পুজো করব। ডিন স্যর সহযোগিতা করলে ভিতরেই করতে পারব।”

একইসঙ্গে প্রান্তিক জানান, সরস্বতী পুজো উৎসব। আর শিক্ষার কোনও ধর্মীয়করণ হতে পারে না। প্রান্তিকের কথায়, “বাম সংগঠন এসএফআইয়ের বর্বরোচিত আক্রমণ প্রেসিডেন্সি অতীতেও দেখেছেন। তাই হয়ত উনি ভীত। উনি ভাবছেন অনুমতি দিলে ওনাকে ঘেরাও করে রাখা হবে। যে কালচারটা প্রেসিডেন্সিতে চলে এসেছে।” এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এক একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব রীতি থাকে। সেই রীতিকেও তো মান্যতা দিতে হবে। ফলে আমাদের ছাত্র সংগঠন যাা বলছে, তাও যেমন ঠিক। প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ যদি একটা কিছু বলে থাকে, তাদের দিকটাও তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখতে হবে। যদি দেখা যায় সেখানে একটা রীতি নিয়ে তারা চলতে চায়, সেখানে বিকল্প কোন পথে বাগদেবীর আরাধনা করা যায় তা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দেখবে।”

এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, “প্রেসিডেন্সি সবসময় ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠানের ঊর্ধ্বে থেকেছে। এটা প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্য। পুজো নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। তবে এরা সরস্বতী পুজোর নামে কী যে করে, তা গোটা বাংলার মানুষ জানে। ওদের মোচ্ছবের সংস্কৃতি শিক্ষাজগতের পরিপন্থী।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours