কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাপ্পা মালাকার। আপার প্রাইমারির জন্য টেটে বসেছিলেন তিনি। পাশও করেন বলে দাবি বাপ্পার। কিন্তু চাকরি পাচ্ছিলেন না।

চাকরি পাবেন সেই আশায় এক শিক্ষককে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন এক হবু শিক্ষক। কিন্তু সে চাকরি পাননি। পাচ্ছিলেন না টাকাও। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে আমবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) আদালতে তোলা হবে তাঁকে। অভিযুক্ত শিক্ষককে আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। আপার প্রাইমারিতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েকজন টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ওই শিক্ষক টাকা নেন বলে অভিযোগ। এদিকে আদালতের নির্দেশে প্যানেল বাতিল হওয়ার পর যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা তা ফেরত চান। কোনওভাবেই টাকা না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, প্যানেল বাতিল হওয়ার পর টাকা ফেরত চাওয়াতে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকে।

পাশও করেন বলে দাবি বাপ্পার। কিন্তু চাকরি পাচ্ছিলেন না। এরপরই পথ বদল করেন। বাপ্পা মালাকারের দাবি, ২০১৬ সালে টেট পাশ করার পরও নিয়োগ পাননি। এরইমধ্যে বছর তিনেক আগে তাঁর বাড়িতে এক এজেন্টকে নিয়ে আসেন কোচবিহার জেলার শীতলখুচির বাসিন্দা ওই শিক্ষক। রাজগঞ্জ ব্লকের আমবাড়িরই এক হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক তিনি।

অভিযোগ, ওই শিক্ষক বলেছিলেন চাকরি তিনি পাইয়ে দেবেন। ১৭ লক্ষ টাকা দিতে হবে। কিন্তু এরইমধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি ফাঁস হতেই প্যানেল বাতিল হয়ে যায়। তাতেই মাথায় হাত পড়ে যায় বাপ্পা মালাকারদের। বাপ্পা জানান, তিনি শীতলখুচিতে ওই শিক্ষকের বাড়িতেও যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন রাজগঞ্জ ব্লকের ঘোঘোমালি এলাকায় নতুন বাড়ি কিনেছেন। সেই বাড়িতে টাকা ফেরত চাইতে যান বাপ্পা ও আরও কয়েকজন। দু’পক্ষের আলোচনার পর ওই শিক্ষক টাকা ফেরাবেনও বলেছিলেন। কিন্তু তা দেননি।

বাপ্পা মালাকারের কথায়, “আমি টেট পাশ করেছি ২০১৬ সালে। আপার প্রাথমিকের জন্য আমি টাকাও দিই। সবই হয়ে গিয়েছিল। এখন কোর্ট থেকে সব বাতিল করে দিয়েছে। আমি ওনাকে বললাম বাড়ি জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। সেটা ফিরিয়ে দিন। আমার চেনা পরিচিত আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা দিয়েছি আমি। তিন বছর হয়ে গেল। চাকরি করে দেবেন বলেছিলেন। এরপর তালিকা বাতিল হয়ে গেল। উনি এজেন্ট নিয়ে এসেছিলেন আমার বাড়িতে। বলেছিলেন, তুমি তো ভাল ছাত্র, রেজাল্ট ভাল। চাকরি নিতে চাইলে যোগাযোগ কোরো। আমিও যোগাযোগ করি। নিজেকে নিঃস্ব করে সব দিয়েছি। এখন ভাড়া বাড়িতে থাকি। উনি টাকা দিচ্ছেন না। এদিকে ফোন বন্ধ, বাড়িতে গেলে পাই না।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours