পরাজিত দলের সদস্যকেই কেন চেয়ারপার্সন করা হচ্ছে, তা নিয়ে শাসকদলের কাছে প্রশ্ন তুলেছে আদালত।

ঝালদা পুরসভা (Jhalda Municipality) নিয়ে ফের ধাক্কা খেল রাজ্য। ঝালদা পুরসভায় পূর্ণিমা কান্দু (Purnima Kandu) অ্যাক্টিং চেয়ারপার্সন থাকবেন। এমনই রায় দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। অন্যদিকে, শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলর পদ খারিজের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। সুদীপ কর্মকারকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। এটা ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে জানিয়েছেন শীলা চট্টোপাধ্যায়


আদালত সূত্রে খবর, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পূর্ণিমা কান্দু চেয়ারম্যান পদে থাকবেন। পরাজিত দলের সদস্যকেই কেন চেয়ারপার্সন করা হচ্ছে, তা নিয়ে শাসকদলের কাছে প্রশ্ন তুলে রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে আদালত। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কেন প্রতিবার শাসকদলের সদস্যকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে? আদালতের প্রতি একটু সম্মান দেখানো উচিত। সেই সম্মান তো দেখানোই হচ্ছে না, উল্টে আপনারা নির্লজ্জভাবে ক্ষমতা ধীরে রাখার চেষ্টা করছেন। এত তাড়া কিসের?” যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়, তাহলে জেলাশাসক দায়িত্ব সামলাক। এরপরই বিচারপতি সিনহা ক্ষোভের সুরে বলেন, “প্লিজ। সব কিছুর একটা শেষ থাকা উচিত।” এরপরেই বিচারপতি বলেন, “পূর্ণিমা কান্দু আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত পুরপ্রধান হিসেবে কাজ করবেন।” শীলা চট্টপাধ্যায়ের কাউন্সিলর পদ খারিজের যে নির্দেশিকা ছিল সেটায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশি সুদীপ কর্মকারকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।

যদিও পূর্ণিমা কান্দুকে আপাতত ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চেয়ারম্যান রাখা এবং শীলা চট্টোপাধ্যায়ের কাউন্সিলর পদ খারিজের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে এখনও পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ তিনি হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন। মন্ত্রীর কথায়, “আদালতের নির্দেশ হাতে পেলেই যা করার পর করব।” কংগ্রেসের তরফে কেউ পুর চেয়ারম্যান হতে চাইলে তাঁকে পিটিশন দিক বলেও জানিয়েছেন ফিরহাদ।

প্রসঙ্গত, ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় ৫টি আসন কংগ্রেস পায়, তৃণমূলও পায় ৫টি আসন। বাকি ২টি জেতে দুই নির্দল প্রার্থী। দুই নির্দল কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ কর্মকারের সমর্থনেই প্রথমে বোর্ড তৈরি করেছিল তৃণমূল। কিছুদিন পরই সোমনাথ কর্মকার সরব হন, ঝালদায় কোনও উন্নতি হচ্ছে না। তিনি সমর্থন প্রত্যাহারের কথাও ঘোষণা করেন। এরপর একই যুক্তি দেখিয়ে তৃণমূলের বোর্ড থেকে সরে দাঁড়ান শীলাও। এর কয়েক মাসের মধ্যেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। তাতে সমর্থন জানান দুই নির্দল কাউন্সিলর। এরই মধ্যে নির্দলের সোমনাথ কর্মকার আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগদানও করেন। আস্থা ভোটে জয়ী হলেও সে সময় কংগ্রেস বোর্ড গঠন করতে পারেনি। রাজ্য সরকারের নির্দেশে প্রশাসক বসানো হয় ঝালদা পুরসভায়। যা নিয়ে হাইকোর্টে যায় কংগ্রেস।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours