অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর দলের তরফে বীরভূম জেলার দায়িত্ব চারজনকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এরপর দলের অন্দরে দলাদলিও বেড়েছে বলেই অভিযোগ।


গত বছর অগস্ট মাসে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। ১১ অগস্ট তাঁকে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই। প্রায় ৬ মাস হতে চলল। এর মাঝে অজয়ের জল গড়িয়েছে অনেক দূর। বীরভূমের বেতাজ বাদশাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির আদালত। তিনিও দিল্লিযাত্রা রুখতে মরিয়া। আর এই টানাপোড়েনের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম সফর। আগামী ৩০ তারিখ বীরভূমে যাচ্ছেন মমতা। শোনা যাচ্ছে, মমতার এই সফরে অনুব্রতকে কার্যত আবছা করে ফেলবে দল। কোথাও দেখা যাবে না অনুব্রতর ছবি, নেওয়া হবে না নামও। শনিবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের বোলপুর কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। তাতেই এই সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রের দাবি। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রতকে ঝেড়ে ফেলতে চলেছে দল? একটা সময় বলা হতো, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ ছাড়া বীরভূমে একটা পাতাও গাছ থেকে পড়ে না। সেই অনব্রত প্রায় ৬ মাস ধরে জেলে বিচারাধীন বন্দি হয়ে রয়েছেন। বোলপুরে অনুব্রত যে বাড়িতে সকাল থেকে রাত, শুধুই ভিড় নজরে আসত সেসব এখন উধাও। ধীরে ধীরে তাঁর ‘অনুরাগী’রা দূরত্ব বাড়িয়েছেন বীরভূম জেলা কার্যালয় থেকেও। এবার কি দলের কর্মসূচি থেকেও সরানো হচ্ছে কেষ্টকে?


অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর দলের তরফে বীরভূম জেলার দায়িত্ব চারজনকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এরপর দলের অন্দরে দলাদলিও বেড়েছে বলেই অভিযোগ। ‘দিদির দূত’ হিসাবে এই জেলাতেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন শতাব্দী রায়, বিকাশ রায় চৌধুরী বা অসিত মালের মতো নেতারা। অনুব্রত জেলায় সংগঠনকে বেঁধে রেখেছিলেন। এখন দলীয় নেতার বিরুদ্ধে একে অপরে প্রকাশ্যে ক্ষোভও ঢেলে দেন।

তবে অনুব্রতর ‘সাংগঠনিক দক্ষতা’ যতই হোক না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দলে বিড়ম্বনা বাড়াচ্ছে বলেই সূত্রের দাবি। দলের অন্দরের এই ক্ষোভ সামাল দিতে মরিয়া জেলা নেতৃত্ব। এসবের মধ্যেই মাসের শেষে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন জেলায়। তার আগে শোনা যাচ্ছে, অনুব্রতকে প্রচার থেকে ‘ভ্যানিশ’ করতে চাইছে জেলা নেতৃত্ব।

যদিও এ কথা মানতে চাননি সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী। তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। লোকে অপপ্রচার করছে।” যদিও জেলা বিজেপির তরফে সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “বীরভূমের বাঘকে প্রত্যাখ্যান করতে চাইছে তৃণমূল। দল বুঝতে পারছে এদের সঙ্গে রাখলে আখেরে বিপদই হবে।”

তবে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এটা আমি একেবারেই বলতে পারব না। এটা জেলা নেতৃত্ব স্থানীয় নেতৃত্বের বিষয়। এ ব্যাপারে আমার কোনও মন্তব্য নেই। অনুব্রত মণ্ডল দলের একজন ডাকসাইটে নেতা ছিলেন বা আছেন। তিনি ঘটনাচক্রে বন্দি। যদি দোষী হন, প্রমাণ হবে। তিনি লড়ছেন। এ বিষয়ে আলাদা করে কোনও বক্তব্য নেই।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours