আছিয়া কার্নিশে পৌঁছলেন কী ভাবে? পুলিশ আধিকারিকদের অনুমান, শৌচাগারের ভেন্টিলেটরের পথ ধরে কার্নিশে গিয়েছেন আছিয়া। আর এখানেই পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না কমিটির সদস্যদের একাংশ।


ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে (National Medical College Hospital) প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। ওয়ার্ডের শৌচাগারের পথ ধরে রোগিণীর কার্নিশে পৌঁছনোর তত্ত্ব বিশ্বাসযোগ্য ঠেকছে না খোদ স্বাস্থ্য ভবনের (Health Department) কমিটির‌ই। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। মঙ্গলবার, দুপুরে ওই কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। স্ত্রীরোগ বিভাগের ওয়ার্ড ঘুরে দেখার পাশাপাশি যেখানে আছিয়া বিবির দেহ পড়েছিল সেই জায়গাটিও এদিন ঘুরে দেখেন কমিটির সদস্যের। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, উঁচু জায়গা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আছিয়ার। কমিটির সদস্যদের পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কার্নিশে আছিয়ার পায়ের ছাপ রয়েছে। কার্নিশের ধুলোর নমুনা আছিয়ার পায়ের তলায় লেগেছিল। 

পুলিশের দাবির সঙ্গে একমত নয় খোদ স্বাস্থ্য ভবনের কমিটি

এখন প্রশ্ন হল, আছিয়া কার্নিশে পৌঁছলেন কী ভাবে? পুলিশ আধিকারিকদের অনুমান, শৌচাগারের ভেন্টিলেটরের পথ ধরে কার্নিশে গিয়েছেন আছিয়া। আর এখানেই পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না কমিটির সদস্যদের একাংশ। কমিটির সদস্যরা এদিন মাপজোক করে দেখেন, স্ত্রীরোগ বিভাগের শৌচাগারে অবস্থিত পুরনো দিনের ভেন্টিলেটরটি লম্বায় ৯ ইঞ্চি এবং চ‌ওড়ায় ১৪ ইঞ্চি। এটুকু ফাঁক দিয়ে একজন রোগিণী গলে যেতে পারেন বলে তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না কমিটির চিকিৎসকদের। কমিটির সদস্য চিকিৎসকদের বক্তব্য, মাত্র তিনদিন আগে অস্ত্রোপচার করে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রসূতি। অস্ত্রোপচারের জন্য শারীরিক দুর্বলতা থাকে। সেই দুর্বলতা কাটিয়ে শৌচাগারের মেঝে থেকে রীতিমতো কসরত করে শরীর গলিয়ে তবে কার্নিশে পৌঁছতে পারেন আছিয়া। সেটা কী সম্ভব? 

প্রশ্ন আর‌ও রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে আছিয়াকে শৌচাগারের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে। ওই শৌচাগারে প্রতি পাঁচ মিনিটে কোন‌ও না কোন‌ও রোগিণী বা তাঁর আত্মীয়ের যাতায়াত লক্ষ্য করা গিয়েছে। কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, ভেন্টিলেটরের পথ ধরে কার্নিশে পৌঁছনোর বিষয়টি সময়সাপেক্ষ হ‌ওয়ার কথা। ওই সময়ের মধ্যে আর কোন‌ও রোগিণী আছিয়া যে শৌচাগারে গিয়েছিলেন সেখানে যাননি! শৌচাগার ভিতর থেকে বন্ধ করে আছিয়া কিছু করেননি। ভিতর থেকে শৌচাগার বন্ধ করার কোনও তথ্য‌ও সামনে আসেনি। এ সব প্রশ্নে উত্তর যাতে পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য ভবনের গঠিত তদন্ত কমিটি। 

পাশাপাশি, হাসপাতাল চত্বরে দীর্ঘক্ষণ দেহ পড়ে থাকলেও তা হাসপাতালের রক্ষীদের কেন নজরে পড়ল না সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। এদিন স্বাস্থ্য ভবনে যে রিপোর্ট জমা করা হয়েছে তাতে অসন্তোষের কথা জানানো হয়েছে। ওয়ার্ডের শৌচাগারগুলির ছিদ্রপথ বন্ধের জন্য হাসপাতালের পূর্ত বিভাগকে বলা হয়েছে। এক‌ই সঙ্গে ওয়ার্ডের সিসি ক্যামেরা বৃদ্ধির সুপারিশ‌ও রয়েছে পাঁচ সদস্যের কমিটির রিপোর্টে।

জমা পড়েছে তদন্ত রিপোর্ট 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours