পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তফাত বোঝা যায় খাদ্যাভ্যাস দেখেই। পুরুষদের বেশি পরিমাণ মাংস খাওয়ার অভ্যেস মানেই তা পরিবেশে আরও বেশি কার্বন ফুটপ্রিন্ট তৈরি করা।


সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা অনেক বেশি কার্বন ফুটপ্রিন্ট উৎপাদন করে। ফলে, পশু কল্যাণ সংস্থা পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিমালস বা ‘পেটা’ সমগ্র বিশ্বের মহিলাদের কাছে এক অভিনব আবেদন করেছে। সংস্থার আবেদন, মাংসভোগী পুরুষ এবং পরিবেশের ক্ষতি করছেন এমন পুরুষের সঙ্গে যৌনতা বন্ধ করুন মহিলারা। সংস্থার পক্ষে জানানো হয়েছে, পুরুষের কুকর্মের ফল ভোগ করা উচিত। পুরুষদের শিক্ষা দিতে নয়া পদ্ধতি অবলম্বন করার কথা বলছে পশু কল্যাণ সংস্থা পেটা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে, জলবায়ু সংকটের পিছনে পুরুষের মাংস ভক্ষণের বিরাট বড় ভূমিকা রয়েছে। এই কারণে মহিলাদের কাছে পেটার আবেদন— অতিরিক্ত মাংসভোগী পুরুষের বিরুদ্ধে যৌন ধর্মঘট ঘোষণা করুক মহিলারা। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ সমগ্র পৃথিবীকে ক্ষতিকারক পৌরুষের প্রদর্শনী ও পরিবেশ ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।

পিএলওএস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু বিপর্যয়ের পিছনে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ভূমিকা অনেক বেশি। প্রাথমিকভাবে এর পিছনে মূল কারণ হল প্রাণীর মাংস ভক্ষণ। পেটার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমিশাষী পুরুষের মাংস ভক্ষণের অভ্যেসের কারণে ৪১ শতাংশ বেশি গ্রিন হাউজ গ্যাস তৈরি হয়। তাদের আরও দাবি, পুরুষরা যা করেছে তার দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

পেটার আরও দাবি,‘আমরা ওদের সবাইকে চিনি, শহরতলির পুরুষ মানেই হাতে বিয়ারের বোতল। আর দামি গ্যাসচালিত গ্রিল মেশিনে ওরা রসিয়ে চিমটে দিয়ে সসেজ সেকে।’ প্রতিষ্ঠানের তরফে আরও বলা হয়েছে, পুরুষরা বাকিদের কাছে পৌরুষ জাহিরের জন্য মাংসের বার্বিকিউ বানায়। মাংস গ্রিল করে। এই ধরনের পুরুষরা প্রাণীদের সঙ্গে পরিবেশেরও ক্ষতি করে।

প্রতিষ্ঠানের তরফে ডাঃ ক্যারিজ বেনেট জানিয়েছেন, পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তফাত বোঝা যায় খাদ্যাভ্যাস দেখেই। পুরুষদের বেশি পরিমাণ মাংস খাওয়ার অভ্যেস মানেই তা পরিবেশে আরও বেশি কার্বন ফুটপ্রিন্ট তৈরি করা।

অন্যদিকে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে ও পরিবেশ রক্ষার্থে পেটা ‘মাংস কর’ বসানোর প্রস্তাব রেখেছে। পেটার জার্মানি শাখার তরফে ড্যানিয়েল কক্স দাবি করেছেন ৪১ শতাংশ মাংস কর বসানো উচিত পুরুষদের উপর।

পেটার এই দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনরা দিতে শুরু করেন তাদের প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলেন, মাংস ভক্ষণকারী মহিলাদের নিয়ে পেটা কিছু বলছে না কেন? কেউ আবার বলেন পেটার হলটা কী? এক নেটিজেন বলেন, খাবার নষ্ট করলেই কার্বন ফুটপ্রিন্ট তৈরি হয়। তা যে কোনও খাদ্যই। এমনকী নিরামিশাষীরাও কার্বন ফুটপ্রিন্ট তৈরি করে। আলাদা করে মাংসভোগীদের নিয়ে মন্তব্য কার অর্থ কী? একদল নেটিজেনের আবার মন্তব্য, প্রাণীদের খামারে চাষ করা হয় খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার জন্যই, তাতে ভুলটা কোথায়?

নেটিজেনরা এও বলছেন, শরীরের জরুরি অ্যামাইনো অ্যাসিডের বেশিরভাগটাই মেলে প্রাণীজ প্রোটিনে। এই ধরনের জরুরি অ্যামাইনো অ্যাসডি তাহলে কীভাবে পাওয়া যাবে? আর একজন নেটিজেনের সরস মন্তব্য— মাংসভক্ষণকারী পুরুষরা যদি সেক্স স্ট্রাইক করে তাহলে মহিলাদের কী হবে
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours