স্যাচুরেটেড ফ্যাট সরাসরি রক্তে জমা হয়ে হার্ট অ্যার্টাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। লোভনীয় যে কোনও খাবারেই এই স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। আর তাই নিজেকে কোলেস্টেরল মুক্ত রাখতে যে সব খাবার থেকে দূরে থাকবেন
একটানা বসে একজায়গায় কাজ, কোনও রকম শরীরচর্চা না করা, অতিরিক্ত পরিমাণ মশলাদার খাবার খাওয়া, দিনের পর দিন পেটের শান্তির জন্য বিরিয়ানি, পোলাও, মাটন সাঁটালে সেখান থেকে শরীর খারাপ হতে বাধ্য। অতিরিক্ত খাবার খেলে শুধুই যে ওবেসিটি আসে তাই নয়, সেখান থেকে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, হাইব্লাডপ্রেশার, ডায়াবেটিসের মত একাধিক সমস্যা আসে। শরীরের এই সব সমস্যার মধ্যে কোনও একটি লক্ষণ দেখা গেলে তা বাকি সমস্যাকেও আমন্ত্রণ জামায়। বিশেষত কোলেস্টেরল বাড়লে সেখান থেকে হৃদরোগের আশঙ্কা থাকে সবচাইতে বেশি। শরীরে ভালো-খারাপ দুই রকমই কোলেস্টেরল থাকে। কোলেস্টেরল হল একরকম মোমজাতীয় পদার্থ। যা শরীরে হরমোন, ভিটামিন এবং নতুন কোষ তৈরীতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল বাড়লে যে সব সমস্যা হয়
কোলেস্টেরল বাড়লে শরীরে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকখানি বেড়ে যায়। কোলেস্টেরল বাড়তে শুরু করলে তা প্রথমে ধমনীর আশপাশে জমতে শুরু করে। রক্তনালীতে ফ্যাট জমতে শুরু করলে শিরায় রক্ত পৌঁছয় না। হার্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত না পৌঁছলেই তখন স্ট্রোকের সম্ভাবনা থেকে যায়। এই জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি হঠাৎ ফেটে গিয়ে জমাট বাঁধতে পারে। জমাট বাঁধলেই হার্ট অ্যার্টাক অবধারিত। যে কারণে শরীর সুস্থ রাখতে ডায়াটেশিয়ানরা বলছে পুষ্টিকর খাবার খেতে। যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট সরাসরি রক্তে জমা হয়ে হার্ট অ্যার্টাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। লোভনীয় যে কোনও খাবারেই এই স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। আর তাই নিজেকে কোলেস্টেরল মুক্ত রাখতে যে সব খাবার থেকে দূরে থাকবেন-
তেলেভাজা- সকাল থেকে যতই ডায়েট করে খাবার খাওয়া হোক না কেন সন্ধ্যে হলেই মন ছোটে তেলেভাজার দিকে। চায়ের সঙ্গে সিঙ্গাড়া, তেলেভাজা এসব খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা বিরল। অধিকাংশই পছন্দ করে চপ, পেঁয়াজি, সিঙ্গাড়া। রোজ এই চপ-পেঁয়াজি ফেলে কোলেস্টেরল বাড়বেই। এই সব খাবারে যেমন ক্যালোরির পরিমাণ বেশি তেমনই ট্রান্স ফ্যাটও বেশি পরিমাণে থাকে। এই সব খাবার খেলে হৃদরোগ, ওবেসিটি, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়বেই।
কেক- ব্রাউনি, কুকিজ, আইসক্রিমের মতো খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। রোজ যদি এক টুকরো করেও ব্লাউনি খাওয়া হয় তাহলে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল বাড়তে বাধ্য। রোজ এই পেস্ট্রি, আইসক্রিম খেলে শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরলের পরকিমাণ বাড়বেই। এতে শরীরের ক্ষতি হয়। ওজন বাড়ে। কেক, পেস্ট্রির মধ্যে শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর কোনও ফ্যাট থাকে না। ফলে তা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
প্রক্রিয়াজাত খাবার- সসেজ, বেকন ইত্যাদি স্বাদে ভাল, তবে এসব খাবারের মধ্যে কোলেস্টেরল সবচেয়ে বেশি পরিমাণে থাকে। এই সসেজ, বেকন এসব হট ডগ, স্যান্ডউইচ, বার্গার তৈরিতেই বেশি ব্যবহার করা হয়। ফলে হৃদরোগ, কোলনক্যানসারের আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যায়। প্রক্রিয়াজাত মাংসের মধ্যে পুষ্টির পরিমাণ কম, নুনের ভাগ বেশি। তাই এই প্রক্রিয়াজাত মাংস একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। রোজ চিকেন খেতে চাইলে দোকান থেকে ফ্রেশ চিকেন কিনে আনুন।
বেকড খাবার- যে খাবারের মধ্যে চিনি, মাখন, ময়দার পরিমাণ বেশি থাকে সেই সব খাবারের মধ্যে ক্যালোরিও বেশি পরিমাণে থাকে। এই সব খাবার কোনও ভাবেই শরীরের জন্য ভাল নয়। প্রচুর পরিমাণে এলডিএল থাকায় তা হতে পারে এথেরোস্ক্লেরোসিসের কারণ। বেকড খাবার বেশি খেলেই রক্তনালীতে কোলেস্টেরল, চর্বি ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ জমা হতে থাকে। আর তাই প্রথম থেকেই এড়িয়ে চলুন এই সব খাবার।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours