বছর পাঁচেক আগে মিনতি দেবীর কোমর ভেঙে যায়। সূত্রের খবর, তারপর থেকে তিনি সেভাবে হাঁটাচলা করতে পারতেন না।
রবিনসন স্ট্রিটের (Robinson street) ছায়া এবার হাওড়ার (Howrah) রামরাজাতলার নন্দীপাড়া এলাকায়। তিন দিন ধরে মায়ের পচাগলা মৃতদেহ আগলে বসে রইলে মেয়ে। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জগাছা থানার পুলিশ গিয়ে মিনতি কুন্ডু (৭৫) নামে ওই বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করল। এদিন সন্ধ্যায় মিনতি দেবীর মেয়ে সুমনা কুন্ডু (৪১) নিজেই প্রতিবেশীদের ডেকে জানান, তাঁর মা গত রবিবার ভোরে মারা গিয়েছেন। তিনি মা কে বাড়ির ভিতরেই সমাধি দিতে চান। মেয়ের মুখে এই কথা শুনেই চমকে ওঠেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই মৃতার ছেলে সুদীপ্ত কুন্ডুকে খবর দেন।
তিনি আবার অন্যত্র থাকেন। এর পরই খবর যায় পুলিশে। তাঁরা দেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সুমনা কুন্ডু মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই তিনি মায়ের মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এলাকায় ‘ময়ূর’ বাড়ি বলে পরিচিত ওই বাড়ির গৃহকর্তা ছিলেন সুবোধ কুন্ডু। একসময় তাঁদের অনেক ব্যবসা ছিল। রামরাজাতলার শংকর মঠ এলাকায় ধনী পরিবার বলেই পরিচিত ছিলেন। ২০০০ সালে সুবোধবাবু ও মিনতিদেবীর ছেলে সুদীপ্ত বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বছর দেড়েক আগে মারা যান সুবোধবাবু। তার পর থেকে ওই দোতলা বাড়িতে থাকতেন মিনতি দেবী ও তাঁর মেয়ে সুমনা। সুমনাদেবী কিছু কাজকর্ম করতেন না। এমনকী প্রতিবেশীদের কারও সঙ্গে তাঁরা মিশতেন না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর। বাইরেও খুব একটা তাঁদের দেখা যেত না বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
বছর পাঁচেক আগে মিনতি দেবীর কোমর ভেঙে যায়। সূত্রের খবর, তারপর থেকে তিনি সেভাবে উঠে হাঁটাচলা করতে পারতেন না। ফলে পরিবারটি কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিল। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দোতলা বাড়ির দোতলায় মিনতি দেবীর শোওয়ার ঘর থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার হল। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অসুস্থতার কারণেই রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় মিনতিদেবীর। এর পর মানসিকভাবে অসুস্থ মেয়ে কাউকে কিছু না বলেই দেহ আগলে বসেছিলেন। তবে এর পিছনে অন্য কিছু আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এ ঘটনায় স্বভাবতই চাপা উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়
Post A Comment:
0 comments so far,add yours