কাবুলে নিরাপদ বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন আল কায়দা প্রধান আল জ়ওয়াহিরি। মার্কিন এয়ারস্ট্রাইকে অবশেষে নিকেশ হল ৯/১১-র অন্যতম চক্রী। বেশ কয়েক মাস ধরে তাকে শনাক্ত করার জন্য অভিযান চালিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।
ওয়াশিংটন : সন্ত্রাসবাদ দমনে বড় সাফল্য আমেরিকার। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দা প্রধান আয়মান আল-জ়ওয়াহিরিকে (Ayman al-Zawahiri) হত্যা করা হয়েছে। কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলায় খতম করা হয়েছে এই জঙ্গি নেতাকে। কাবুলে এক বাড়ির বারান্দায় হামলা চালিয়ে ৯/১১-র অন্যতম চক্রীকে নিকেশ করে ন্যায়বিচার দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইটারে জানিয়েছেন, গত শনিবার আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা CIA ড্রোন হামলা চালিয়ে খতম করেছে ওসামা বিন লাদেনের এক সময়ের ডাক্তার ও সহকর্মীকে। একটি বাড়ির বারান্দায় আল-জ়ওয়াহিরিকে খতম করা হয়েছে। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্য়ুর পর ১১ বছর কেটে গেলেও শেষ পর্যন্ত খতম হল জ়ওয়াহিরিকে।

আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকা বা পাকিস্তানের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাতে জ়ওয়াহিরি থাকত বলে মনে করা হত। তবে আমেরিকার ঘোষণার পর সেই ভুল ধারণা মুছে যায়। তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলেই নির্বিঘ্নে দিন কাটছিল আল কায়দা প্রধানের। এনডিটি-র একটি প্রতিবেদন সূত্রে এই অভিযান সম্বন্ধে কিছু বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এনডিটিভি সূত্রে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক এই অভিযানের তথ্য তুলে ধরেছেন :

গত বেশ কয়েক বছর ধরেই আমেরিকার সরকার জ়ওয়াহিরিকে সমর্থন করছে এমন একটি নেটওয়ার্কের বিষয়ে সচেতন ছিল। এবং আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই সেখানে আল কায়দার উপস্থিতির দিকে নজর রেখেছিল আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। এই বছরই আধিকারিকরা চিহ্নিত করেছে যে, জ়ওয়াহিরির স্ত্রী, মেয়ে ও তার সন্তানরা কাবুলে একটি নিরাপদ বাড়িতে আস্তানা গেড়েছে। সেখানেই জ়ওয়াহিরিকে চিহ্নিত করা হয়।
কোনও একদিনের অভিযান ছিল না জ়ওয়াহিরিকে নিকেশ করা। জঙ্গি দমনের উদ্দেশে বেশ কয়েক বছর ধরেই সলতে পাকাচ্ছিল বাইডেন প্রশাসন। বেশ কয়েক মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করার পর জ়ওয়াহিরির অবস্থান সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার পরই গোয়েন্দা আধিকারিকরা বর্ষীয়ান প্রশাসনিক আধিকারিকদের এই বিষয়ে জানান।
আধিকারিক এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, জ়ওয়াহিরিকে কাবুলের সেই গোপন আস্থানার ব্যালকনিতে চিহ্নিত করেন। তারপরেই সেখানে তার উপস্থিতি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করেই অভিযান চালানো হয়নি। সেখানকার বাসিন্দা, জ়ওয়াহিরির পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সেই নিরাপদ বাড়ির গঠন, কাঠামো খতিয়ে দেখা হয়েছে। এবং সবরকম নিরাপত্তা সম্বন্ধে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খোঁজ নিয়েছেন।
মিসাইল হামলার আগে সেই নিরাপদ বাড়ি বা সেফ হাউসের একটি মডেল তৈরি করে বাইডেনের সামনে তা উপস্থাপনও করা হয়। আধিকারিক জানিয়েছেন, এই অভিযান সম্বন্ধে সব খুঁটিনাটি বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন বাইডেন। তিনি কাবুলে স্ট্রাইকের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করে এই অভিযান চালানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours