বুধবার এক মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের তরফে পর্যবেক্ষণ করা হয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় রাজনৈতিক দলগুলি যখন বিনামূল্যে সামগ্রী বিতরণের প্রতিশ্রুতি দেয় তা একটি ‘গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা’। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, এই সামগ্রীর বিতরণের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য একটি স্বতন্ত্র সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় আদর্শ আচরণ বিধি যাতে লঙ্ঘন না হয়, তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে, ভোট প্রচারে গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের ‘বিনামূল্য সামগ্রীর’ প্রলোভনে ফেলে দেন। হয়ত ময়দান ভরাতে বিরিয়ানির প্যাকেট বা কিছু ক্ষেত্রে নগদ। দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে অনেক সময় টিভি বা ফ্রিজের মতো সামগ্রী দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই দলগুলো কোনও বিধি ভঙ্গ না করেও প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা ক্ষমতায় এলে অমুক বস্তু বিনামূল্যে দেওয়া হবে। তা রেশন হতে পারে বা বিদ্যুৎ। আর এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এক মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের তরফে পর্যবেক্ষণ করা হয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় রাজনৈতিক দলগুলি যখন বিনামূল্যে সামগ্রী বিতরণের প্রতিশ্রুতি দেয় তা একটি ‘গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা’। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, এই সামগ্রীর বিতরণের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য একটি স্বতন্ত্র সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে।

উল্লেখ্য, আবেদনকারী দাবি করেছেন, বিনামূল্যে সামগ্রী বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিলে রাজনৈতিক দলের প্রতীক কেড়ে নেওয়া উচিত এবং তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা উচিত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা, বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারি এবং হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বলেছে যে নীতি আয়োগ, অর্থ কমিশন, শাসক ও বিরোধী দল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে। সেই সংস্থার কাজ হবে, রাজনৈতিক দলগুলো যাতে অবাধে বিনামূল্যে সামগ্রী বিতরণের প্রতিশ্রুতি না দিতে পারে, সেই সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া।

সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্র, নির্বাচন কমিশন, সিনিয়র আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল এবং আবেদনকারীদেরকে একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থার গঠনের বিষয়ে পরামর্শ জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাঁদের এই পরামর্শ দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত। কীভাবে বিনামূল্য সামগ্রী বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা পরীক্ষা করার জন্য সংস্থার গঠনতন্ত্র কী হবে সেই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে হবে তাঁদের। এদিকে সরকারের পক্ষে এই মামলায় প্রতিনিধিত্ব করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি এই আবেদনকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে (বিনামূল্যে সামগ্রী বিতরণ) আমরা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতি ভোটারদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।’ এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলই এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফায়দা পায়। আমি নির্দিষ্ট কোনও দলের নাম নিতে চাই না।’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours