নন্দীগ্রামে বিজেপি-র পদযাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে শনিবার দাবি করেছেন সুফিয়ান।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের প্রতি আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর অধিকারী। শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ করে সেই আক্রমণের জবাব দিলেন নন্দীগ্রামে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। নন্দীগ্রামে বিজেপি-র পদযাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে শনিবার দাবি করেছেন সুফিয়ান।

নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বলেছেন, “শুভেন্দু অধিকারীর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে। ওর বাবা শিশির অধিকারীকে বলব ওকে ডাক্তার দেখান।” সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপিকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। বলেছেন, “বিহার তো বগলদাবা দিয়ে পালিয়ে গেল। তার পরও ৭০টা আসন নিয়ে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ দখল করবে বলছে। বিহারের মতো ওদের থেকে সব পালিয়ে যাবে। দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। স্বাধীনতা ফিরে পেতে শ্রীলঙ্কার মতো এ দেশের মানুষও গর্জে উঠবেন। মানুষের গণতন্ত্র, অধিকার সব কেড়ে নিয়েছে বিজেপি। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে ওদের মুখে কুৎসা মানায় না। ওরা পাগলের প্রলাপ বকছে।”

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পক্ষপাতদুষ্ট। এই অভিযোগ তুলে সভার আয়োজন করে তৃণমূল। তমলুক সাংগঠনিক জেলার পক্ষে এই সভায় ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। রাজ্যের ক্ষমতায় আসার জন্য বিজেপি তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই-কে লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। শনিবার সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, “গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মানুষের সমর্থন অর্জন করে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর বিজেপি জনসমর্থন হারিয়ে ইডি, সিবিআইকে ধরে ক্ষমতা দখলের দিবা স্বপ্ন দেখছে। মানুষের কাছে গিয়ে উন্নয়নের কথা বলতে ব্যর্থ বিজেপি। সে কারণে তাদের ছলনার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। আর তা করে যাঁরা নির্ভিকভাবে প্রশাসন চালানোর রাস্তায় ছিলেন তাঁদের মেরুদন্ড ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।” ইডি, সিবিআই-এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সৌমেনবাবু। তিনি বলেন, “ইডি, সিবিআই বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে। ওদের তদন্তের কোনও গোপনীয়তা নেই। অপরাধীকে কোথায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। কি কি জিজ্ঞাসা করবে তার তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। এর অর্থ এদের মধ্যে তলে তলে সব যোগ রয়েছে। আর সিপিএম, কংগ্রেস বলছে সেটিং চলছে। তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তুলছে। কিন্তু সেটিংয়ের কথা যদি বলতে হয়, তাহলে তা হাত-হাতুড়ি-পদ্মের মধ্যে হচ্ছে। ওদের সমন্বয় সর্বত্রই প্রকাশ পাচ্ছে। এই তিন দল মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। তাই আমাদের প্রতিবাদ। এদের জব্দ করতে হবে। জবাব দিতে হবে পঞ্চায়েত ও লোকসভার ভোটে।” যুব তৃণমূলের উদ্যোগে কাঁথি, রামনগর, এগরা, হলদিয়ার বিভিন্ন জায়গায়ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতার প্রশ্নে পথে নামে যুব তৃণমূল।

তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি ও শেখ সুফিয়ানের বক্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি এবং নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পাল। তিনি বলেছেন “তৃণমূলের নেতা কর্মীরা মূর্খ। ইডি ও সিবিআই এক একটি স্বশাসিত সংস্থা। আর সুফিয়ান কথার উত্তর না দেওয়ায় ভাল। চোর ডাকাতের মতো বাড়ির ভিতরে লুকিয়ে থাকেন। সাহস থাকে যদি সিবিআইয়ের সামনে বসুন। তাঁরাই লুকিয়ে থাকে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। নোংরা কদর্য ভাষা বলে শুভেন্দু অধিকারীকে দমানো যাবে না। ৪ বছর জেল খাটা আসামি কুনাল ঘোষ পারেনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পারেনি। শুভেন্দু আগামী দিনের বাংলার কাণ্ডারি।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours