বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন কমিটির দুই সদস্যের মন্তব্য শোনার পর বলেন, "এটা অবিশ্বাস্য যে বোর্ড যে মিটিং ডাকে, সেখানে সই করায় না।"
নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক ভট্টাচার্যের মামলায় এদিন আদালতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল নিয়োগ কমিটির দুই সদস্য দেবজ্যোতি ঘোষ এবং পঞ্চানন রায়কে। অপর এক সদস্য সিস্টার এমিলিয়াকে বয়সজনিত কারণে আদালতে সশরীরে হাজিরা না দিয়ে হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল। উল্লেখ্য, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর প্রশ্ন ভুল নিয়ে বোর্ডের সিদ্ধান্তের জন্য একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে ছিলেন দেবজ্যোতি বাবু এবং পঞ্চানন বাবু। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের বেশ কিছু প্রশ্ন করেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় : কীভাবে বৈঠক ডাকা হয়? কতগুলি বৈঠকে ছিলেন? বৈঠকে থাকলে কেন সই করেননি? রেসোলিউশনে কেন সই নেই? মিনিটে সই আর অ্যাটেন্ড্যান্সে হাজিরা উভয় আলাদা।
দেবজ্যোতি ঘোষ : সচিব নোটিস দিয়ে বৈঠক ডাকেন। অধিকাংশ বৈঠকেই ছিলাম। ২০ টি বৈঠকে ছিলাম। প্রাইমারি টেটের একটি বৈঠকে প্রশ্নপত্রের দু’টি উত্তর ঠিক হওয়ার বিষয়টি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, যাঁরা দুটি উত্তরের একটি বেছে নিয়েছেন, তাঁদের নম্বর দিতে হবে। কোনও রেসোলিউশনে আমরা সই করি না। পর্ষদের অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টারে সই থেকে বোঝা যাবে উপস্থিত থাকলে। পরের দিন রেসোলিউশন পড়ে শোনানো হয়, তারপর প্রেসিডেন্ট তাতে সই করেন।
দেবজ্যোতির আইনজীবী শান্তনু মৈত্র : আপনাকে কে নিয়োগ করলেন কমিটিতে?
দেবজ্যোতি ঘোষ : রাজ্যপাল।
আগামিকাল (শনিবার) সিবিআই-এর বিশেষ টিমের সঙ্গে দেখা করতে দেবজ্যোতি ঘোষকে। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি কমিটির অন্য এক সদস্য পঞ্চানন রায়কেও বেশ কিছু প্রশ্ন করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় : আপনি কি উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে? তাহলে সই করেননি কেন? সিস্টার এমিলিয়া (ওই কমিটির অন্যতম সদস্য, যিনি আদালতে হাজির ছিলেন না) ছিলেন কি ওই বৈঠকে?
পঞ্চানন রায় : বৈঠকে ঢোকার পর আমরা হাজিরায় সই করি। পরের দিন সেটাই পড়ে শোনানো হয়। আমরা সই করি না। হ্যাঁ, সিস্টার এমিলিয়া ছিলেন বৈঠকে।
পঞ্চানন রায়ের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি তাঁকেও সিবিআই-এর বিশেষ তদন্তকারী দলের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন কমিটির দুই সদস্যের মন্তব্য শোনার পর বলেন, “এটা অবিশ্বাস্য যে বোর্ড যে মিটিং ডাকে, সেখানে সই করায় না। প্রেসিডেন্ট বানিয়ে কথা বলেছেন। যেখানে এই দুই সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিস্টার এমিলিয়ার হলফনামা আদালতের হাতে এসেছে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন বৈঠকে এক নম্বর বেশি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে এই নিয়ে আর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কি না, সেই বিষয়টি তিনি জানেন না। ফলে মাত্র কয়েকজন নম্বর পাবেন, এটা রেসোলিউশন হয়নি।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours