রাজ্যের পর্যটন বিকাশে সাগরকে কেন্দ্র করে মুড়িগঙ্গার ওপর প্রস্তাবিত সেতুর নির্মাণ কতটা যুক্তগ্রাহ্য তা খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘রাইটস’-কে পরমার্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করল।

আগামী ছ'মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে পরমার্শদাতা হিসেবে রাইটস-এর প্রধান কাজই হবে মাটি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া ওই এলাকা সেতু তৈরির উপযুক্ত কিনা। রাজ্য মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর কাকদ্বীপ ও সাগরের মধ্যে এই সেতু নির্মাণ করতে চায়।

সাগর দ্বীপ অঞ্চল হিসেবেই চিহ্নিত। নদী ভাঙনের প্রবণতা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য় মধ্য রয়েছে। পাশাপাশি মুড়িগঙ্গার নব্যতা যাচাই করার প্রয়োজন। দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলার সময় যাত্রী ও পণ্য বোঝাই ভেসেল যাতে মেলা প্রাঙ্গনে নিরাপদে পৌঁছাতে সেচ দফতর থেকে মুড়িগঙ্গা নদীর দুটি চ্যানেল থেকে পলি তুলতে হয়। এখন সেতু করার জন্য নদী বক্ষে স্তম্ভ করতে সেই নাব্যতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে না তো রাইটসের পর্যবেক্ষকরা সেটাই যাচাই করে দেখবে।

এই প্রস্তাবিত ব্রিজ নিয়ে রাজ্যের পূর্ত (সড়ক) ইতিমধ্যেই একটি রূপরেখা তৈরি করেছে। তাতে প্রস্তাবিত খরচ ধরা হয়েছে ১,৬৪৮ কোটি টাকা। রাইটস সেতু নির্মাণের এই খরচের যৌক্তিকতাও যাচাই করবে। পূর্ত দফতরের রূপরেখা অনুযায়ী ৩.২ কিলোমিটার চওড়া নদীতে অপ্রোচ রোড নিয়ে প্রস্তাবিত চারলেনের এই সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৯.৬ কিলোমিটার। যা সরাসরি জাতীয় সড়ক ১১৭ নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হবে।

নবান্ন কর্তাদের মতে, আর্থিক সঙ্কটের জন্য এটি টোল ব্রিজ করা হবে। এই ব্রিজ তৈরি করা হলে সাগরকে কেন্দ্র করে সারা বছর অন্তত ২০ লক্ষ পর্যটক মিলবে। কারণ এখন জলপথেই একমাত্র দ্বীপে পৌঁছাতে হয়। তাই বহু পর্যটক সাগর মেলাতেও আসতে চায় না। এ ছাড়াও সাগরে উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য শহরে দ্রুত পৌঁছাতে পারে। যা এখন জলপথই ভরসা। রাজ্য পূর্ত দফতর আর্থিক সঙ্কটের জন্য পিপিপি বা বিওটি মডেলের বদলে  হাইব্রিড অ্যানুইটি মোড অর্থাৎ হ্যাম মডেল সামনে রেখে এই সেতু নির্মাণ করতে চায়। যার ফলে মূল প্রকল্পের নির্মাণ খরচের ৪০ শতাংশ অর্থ রাজ্য সরকার দেবে। বাকি টাকা নির্মাণকারী সংস্থা দেবে। তিন বছরের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ করে ১৫ বছর ধরে টোল বসিয়ে সেই টাকা তুলে নেবে। এই সময় ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের হাতে থাকবে। সূত্রের খবর, এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব রাজ্যের উত্তর দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সব মিলিয়ে এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই নির্ভর করছে মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours