২০১৯- এর লোকসভা ভোটে মোট ২৩ টি আসন জেতার জন্য টার্গেট করেছিলেন অমিত শাহ। তার মধ্যে জেতা গিয়েছিল ১৮ টি। আরামবাগে ১ হাজারের কম ভোটে হেরে যায় বিজেপি। বিজেপি-র অভিযোগ, তৃণমূল কারচুপি করে জিতেছিল ওই আসনটি। তা নিয়ে জল আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কিন্তু, কাজের কাজ কিছু হয়নি। আরামবাগ থেকে তৃণমূল প্রার্থী অপরুপা পোদ্দার আসনটিতে জিতে সাংসদ হন।

আগামী ২৪-এর নির্বাচনে জেতা ১৮টি আসনের বাইরে যে হারা ২৪টি আসন রয়েছে, তার মধ্যে ১৯টি আসনকে টার্গেট করেছে বিজেপি। এটা কোনও কলমচির ব্যাখ্যা বা কল্পিত তথ্য নয়। এটা বিজেপির ঘোষিত অবস্থান। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন বাকি ২৪ টির মধ্যে ১৯টিকে টার্গেট কেন?

বিজেপি কবুল করছে, ওই ২৪টির মধ্যে পাঁচটি আসন প্রায় ১০০ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। ফলে, ওই আসনে জেতা দূরস্ত, লড়াই করারই কোনও জায়গা নেই। যার মধ্যে একটি আবার কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কেন্দ্র বহরমপুর ও কংগ্রেসের আবু হাসমৎ খান চৌধুরীর কেন্দ্র মালদহ দক্ষ্মিণ৷


বিজেপি-র স্ট্র্যাটেজি থেকে যে প্রশ্ন উঁকি মারে তা হলে কি, ২৪ এর ভোটে বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনে জেতা ১৮টির সঙ্গে আরও ১৯টি আসনকে টার্গেট মোট ৩৭ টি আসন জিতবে বলে এগোচ্ছে? তাহলে উত্তর 'না'৷


কারণ, বিজেপি-ই প্রকাশ্যে বলছে ২৪-এর ভোটে তারা এ রাজ্য থেকে ২৫ টি আসন জিতবে। রাজ্যে এসে অমিত শাহ থেকে শুরু করে জে পি নাড্ডা এ কথা বলে যাওয়ার পর সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরাও সেই সংখ্যাই আওড়ে চলেছেন রোজ। ২১- এর ভোট ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিরিখে এই দাবি বাতুলতা বলে মনে হওয়াই স্বাভাবিক৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২৫ আসন জেতাই যদি টার্গেট হয় তাহলে জেতা ১৮ টি আসনের বাইরে ৭ টি হারা আসনকে টার্গেট করলেই যথেষ্ট। কিন্তু, তা না করে বিজেপি হারা আসনের মধ্যে ১৯টিকে টার্গেট করে মাঠে নেমে পড়েছে। আসলে অমিত শাহরা বুঝেছেন, তাদের জেতা ১৮ আসনের বেশ কিছু এবার ধরে রাখা শক্ত হবে। তাই ২৪- এর জেতার জন্য জেতা আসনের চেয়ে হারা আসনকেই বেশি টার্গেট করছে বিজেপি।


কারণ, বিজেপি জানে উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলে ১৯-এর লোকসভা ও ২১-এর বিধানসভা ভোটে সিংহভাগ আসন তাদেরকেই তুলে দিয়েছে ওই এলাকার মানুষ। কিন্তু, বিগত ৫ বছরে বিজেপি কেন্দ্রে সরকারে থেকেও ওই সব এলাকার হাল ফেরাতে পার নি। সে কারণেই তাদের কথায় কথায় বঞ্চনা, রাজ্যভাগের মতো বিষয়কে হাতিয়ার করে মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাইছে বিজেপি৷ তাতে কতটা চিঁড়ে ভিজবে তা নিয়ে ধন্দে রয়ছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।


তাই জেতা আসন সরিয়ে রেখে হারা আসনে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা সহ মেরুকরণের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে এ রাজ্যে আসন জেতার লড়াইয়ে থাকতে চায় বিজেপি৷







Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours