২৯ টি ব্লক নিয়ে গঠিত সুন্দরবন।প্রায় ৫০ হাজারেরও অধিক মানুষের বসবাস।মূলত চাষবাসের উপর নির্ভরশীল এলাকার মানুষ। বিগত কয়েক বছর যে ভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে এবং নদীবাঁধ ভেঙে এলাকা লবণাক্ত জলে প্লাবিত হচ্ছে তাতে করে পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন এলাকায় চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।ফলে বর্তমানে ধান সহ অন্যান্য ফসলের চাষের পাশাপাশি মাছ চাষ সুন্দরবনবাসীদের জীবন জীবিকার অন্যতম অবলম্বন।আর আধুনিক পদ্ধতিগতভাবে মাছ চাষ না করার জন্য সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার মাছ চাষের উপর নির্ভরশীল মানুষদের কে বিপদের সম্মুখীনহতে হচ্ছে।যাতে করে সুন্দরবনবাসীরা কোন প্রকার বিপদের সম্মূখীন হতে না হয় তার জন্য তাদের পাশে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে এলো কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলীয় মত্স্য গবেষণা কেন্দ্র।আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছ চাষ করার জন্য বিগত এক বছর পূর্বে ৫০০ পরিবার কে মাছের চারা চুন ও মাছের খাদ্য দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।সেই সমস্ত চাষীদের নিয়ে গত তিনদিন ধরে কুলতলী মিলনতীর্থ সোসাইটির সহযোগীতায় এক সচেতনতা শিবির আয়োজন করেছিল কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলীয় মত্স্য গবেষণা কেন্দ্র।
অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অন্তঃস্থলীয় মত্স্য গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর ডঃ বসন্ত কুমার দাস।উপস্থিত ছিলেন কুলতলি মিলনতীর্থ সোসাইটির কর্ণধার লোকমান মোল্লা,আরিফ সরদার,অচিন্ত্য দিন্দা সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।
ডঃ দাস বলেন, সুন্দরবনের মত্স্য চাষীদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে প্রযুক্তি ও মাছের চারা, ফ্লোটিং ফিশ ফিড, চুন দেওয়া হয়েছিল গত এক বছর আগে। বর্তমানে আমাদের বিভাগীয় বিজ্ঞানীগণ সার্ভে করে রিপোর্ট তৈরি করেছেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, আগামী দিনে সহযোগিতা করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেবো। কারণ সুন্দরবনের অর্থনৈতিক মান উন্নয়নে মাছ চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকারী ফসল হতে।যা আগামী দিনে সুন্দরবনবাসীদের কে জীবনজীবিকা নির্ধারণে অন্যতম দিশা হিসাবে দেখা দেবে।'
বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা কুলতলী মিলনতীর্থ সোসাইটির কর্ণধার লোকমান মোল্লা বলেন, প্রতিবছর বন্যা,ঘূর্ণিঝড় এবং অতিবর্ষণে সুন্দরবন এলাকার মাছ চাষীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অন্যান্য চাষও।বারে বারে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সম্মূখীন হয়ে অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে, কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলীয় ও মত্স্য গবেষণা সংস্থার অধিকর্তা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা বাস্তবায়িত করতে পারলে আগামী দিনে সুন্দরবনের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন হতে পারে l তিনি আরো বলেন, মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প পথ থাকে না। সুন্দরবনবাসীদের ক্ষেত্রে অনেকটা সেরকমই পরিস্থিতি। সুতরাং, ধান চাষ যখন ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে সে ক্ষেত্রে মাছ চাষই একমাত্র অন্যতম অবলম্বন।'
Post A Comment:
0 comments so far,add yours