উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার বাংলাদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা তছরুপের নায়ক

তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ আছে। কিন্তু তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে নাম পাল্টে ছিলেন পিকে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার।নাম পাল্টে ফেলে শিবশঙ্কর হালদার নামে ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেলেন তিনি।

কয়েক হাজার কোটি টাকা তছরুপে অভিযুক্ত বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিকে হালদারকে গ্রেফতার হল অশোকনগরে থেকে। পিকে হালদার সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ইডি । যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন পিকে হালদারের স্ত্রী ও ভাই। শনিবার ওই ছজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি ।

জানা গিয়েছে, ৪২৬ কোটি টাকার আয় বহির্ভূত সম্পদ ছাড়াও কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে যুক্ত পিকে হালদার । এর পরিমান ৭ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা লেনদেন করার মামলা করায় প্রশান্ত কুমার হালদার সহহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে। তাদের নামে চার্জশিট জমা পড়ে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে। পিকে হালদারসহ ১০ জন পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

 

উল্লেখ্য, পিকে হালদারের আয়কর আইনজীবী ছিলেন সুকুমার মৃধা। পিকে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সুকুমার মৃধাকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই মামলায় আসামি করা হয়। এরপর দুদক তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। অশোকনগর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সুকুমার মৃধার বিশাল বিলাসী বাড়ির সন্ধান পেয়েছে ইডি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সুকুমারকে তারা মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে চিনতেন। পিকে হালদার ও সুকুমার মৃধা অশোকনগরে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী। ইডি ধারণা করছে, দীর্ঘদিন ধরে এই দুইজনের যোগসাজশে এনআরবির বিপুল অর্থ আত্মসাত্‍ করা হয়েছে।

সুকুমারকে গ্রেফতার করার পরেই পিকের কথা জানা যায়।

তারপরেই ওই টাকা তছরুপের ঘটনায় একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডি। শুক্রবার অশোকনগরের তিনটি জায়গাতে একসঙ্গে তল্লাশি চালানো হয়। অশোকনগরে সুকুমার মৃধা-সহ প্রণব হালদার ও স্বপন মিশ্রের বাড়িতে একযোগে হানা দেন ইডির আধিকারিকরা। সেখানেই শিবশঙ্কর হালদার নামে ছিলেন ওই পিকে হালদার। তিনি সেখানে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান ও আধার কার্ড জোগাড় করেছিলেন।ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রিতিশ কুমার হালদার, প্রানেশ কুমার হালদার ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যুক্ত সম্পদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। পিকে হালদার ভুয়ো পরিচয়ে ভারতে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছিলেন। তিনি কলকাতার অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তি কিনেছেন। তার নামে-বেনামে সম্পত্তির খোঁজে ১০টি জায়গায় তল্লাশি চলছে। তিনি অন্যদের ওই ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদে বসিয়ে ওই টাকা তছরুপ করেন। লোনের নামে টাকা নিয়ে তা পাচার করেন তিনি। পিকের আত্মীয়দেরও জেরা করছে ইডি। এবার পিকে হালদারকে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছে। এই কাজ করতে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে দুদক।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours