রাজস্থানের দৌসার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন চিকিত্সক অর্চনা শর্মা। তাকে নিয়ে আপাতত তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। কিন্তু কি করেছেন তিনি, অবশ্য করেছেন না বলে করেছিলেন বলা ভালো। কারণ মঙ্গলবার সুইসাইড নোটে বিশেষ বার্তা লিখে রেখে আত্মহত্যা করে নিজের জীবন শেষ করেছেন তিনি।
কী ঘটেছিল
চিকিত্সক অর্চনা শর্মার অধীনে এক সন্তানসম্ভবার চিকিত্সা চলছিল।
কি লেখা ছিল সুইসাইড নোটে
"আমি আমার স্বামী এবং সন্তানদের খুব ভালোবাসি। আমার মৃত্যুর পর দয়া করে তাদের হয়রান করবেন না। আমি কোনো ভুল করিনি, কাউকে হত্যা করিনি। পিপিএইচ একটি পরিচিত ও খুব কমন শারীরিক জটিলতা। এর জন্য ডাক্তারদের এত হয়রানি করা বন্ধ করুন। আমার মৃত্যু হয়ত প্রমাণ করবে যে আমি নির্দোষ। নির্দোষ ডাক্তারদের হয়রান করবেন না অনুগ্রহ করে। আমার বাচ্চাদের তাদের মায়ের অনুপস্থিতি অনুভব করতে দেবেন না।"
দৌসার এসপিকে অপসারণ, এসএইচওকে সাসপেন্ড করা হয়েছে
বুধবার, দৌসার লালসোট থানার অফিসার ইনচার্জ, অঙ্কিত চৌধুরীকে চিকিত্সক অর্চনা শর্মা আত্মহত্যার মামলায় সাসপেন্ড করা হয়। রাজস্থান সরকারও দৌসার পুলিশ সুপারকে (এসপি) অপসারণের নির্দেশ দেয়। এদিকে, বুধবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বাসভবনে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকের সময়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে যারা একটি মামলা নথিভুক্ত করে ওই চিকিত্সককে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অশোক গেহলট এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেছেন, দৌসায় চিকিত্সকের আত্মহত্যার বিষয়ে পুলিশ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু তদন্ত করছে। গেহলট আরও জানান, যে তিনি এই বিষয়ে একটি বৈঠক ডাকেন ও আধিকারিকদের চিকিত্সকদের হয়রানি বন্ধের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, "আমি ডিজিকেও নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। আমি আধিকারিকদের সাথে একটি বৈঠকও ডেকেছি এবং এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি,"
বুধবার, অশোক গেহলট অর্চনা শর্মার মৃত্যুতে শোক জানাতে টুইটারে গিয়ে বলেছিলেন, "দৌসায় অর্চনা শর্মার আত্মহত্যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সবাই ডাক্তারদের ঈশ্বরের মর্যাদা দিই। প্রতিটি ডাক্তার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা করে রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য। রোগীর জীবন বাঁচাতে গেলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য চিকিত্সককে দায়ী করা ঠিক নয়।"
Post A Comment:
0 comments so far,add yours