মেধা তালিকায় নাম উঠেছে। তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর মেলেনি নিয়োগ পত্র। রাজ্যে এমন অভিযোগ রয়েছে ভুরি ভুরি। আদালতে চলছে মামলাও। আর এরই মধ্যে রাজপথে বিক্ষোভ দেখানোর সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন এমনই চার চাকরি প্রার্থী। একদিকে রোজা, তার মধ্যে মাথায় প্রবল রোদ নিয়ে অনশন।

আর তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁরা। রবিবার সকালেই ধর্মতলা থেকে চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে, চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনে রাজপথেই মৃত্যুবরণ করবেন, কিন্তু অনশন কোনও ভাবেই বন্ধ করবেন না।

চার বছরেও মেলেনি চাকরি

চাকরি প্রার্থীরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ২০১৭ সালে স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (এসএলএসটি) পরীক্ষা হয়, ২০১৮ সালের ফল প্রকাশিত হয়। আর সেই মেধা তালিকায় নাম ছিল এই চাকরি প্রার্থীদের। এবার ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। আজ দশম দিনে পড়ল সেই অনশন। রবিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, সেখান থেকে তাঁদের মধ্যে চারজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে লালবাজারে। এরপরই ধর্মতলায় অসুস্থ হয়ে পড়েন চারজন।

প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী

শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষায় নিয়োদের জন্য স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (এসএলএসটি) পাশ করেছেন ওই প্রার্থীরা। মেধা তালিকায় নামও উঠেছিল তাঁদের। কিন্তু চার বছর কেটে যাওয়ার পরও মেলেনি চাকরি। তাই এবার আমরণ অনশনে পথে বসেছেন তাঁরা। পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারপরও তাঁরা চাকরি থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এর আগে আচার্য সদন ও বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। তারপরও আজও পর্যন্ত তাঁরা চাকরি থেকে বঞ্চিত। কবে মিলবে চাকরি, সেই আশায় দিন গুনছেন তাঁরা।

ভাইভা না দিয়েও চাকরি পেয়েছেন অনেকে

ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা না দিয়েও অনেকে চাকরি পেয়েছেন, এমনটাই অভিযোগ জানাচ্ছেন অনশনরত চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, মৌখিক পরীক্ষায় পেনসিল দিয়ে নম্বর দেওয়া হয়েছিল। চাকরি প্রার্থীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই অনশন ভাঙবেন না তাঁরা। তাঁরা কোনও মামলা করেননি, তবে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিলম্বে নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটা বিষয়। যাঁরা যোগ্য তাঁদের রোদে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। আর মন্ত্রীর আত্মীয়রা চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আদালতে প্রমাণ হয়েছে অসাধুরা চাকরি করছে। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছেন না। অমানবিক ঘটনা। সরকারের পদক্ষেপ করা উচিত।

উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতো তদন্তও শুরু হয়েছে। একাধিক প্রাক্তন আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours