পাঁচ দিন হতে চলল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। কিছুক্ষণ আগে বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, এই সংঘর্ষে প্রথম প্রাণ গেল এক ভারতীয় পড়ুয়ার। গতকাল দিয়েই একের পর এক মিসাইল ও বোমা বর্ষণ হতে থাকে ইউক্রেনে। রুশ সেনাবাহিনী লাগাতার ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে বোমাবর্ষণ করে গিয়েছে।এরপর ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এদিন টুইটারে জানিয়েছেন, "গভীর শোকের সঙ্গে আমরা এই খবর দিচ্ছি যে, এদিন সকালে বোমাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন এক ভারতীয় পড়ুয়া। বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে"।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে রয়েছে প্রায় ১৫-১৬ হাজারের কাছাকাছি ভারতীয় পড়ুয়া। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বেশ কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিককে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে দেশে। কিন্তু এখনও সেখানে আটকে রয়েছে বহু ভারতীয়। মৃত্যুর খাড়া ঝুলছে তাঁদের উপর। মাঝেমধ্যেই সেখানকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির ভিডিও এবং ছবি উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্বরা।

এবার এই দুই যুদ্ধে প্রথম প্রাণ হারালেন ভারতীয় এক ছাত্র। এদিন টুইটারে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, "মৃতের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রয়েছে"। পুরো নাম নবীন শেখারারাপ্পা গ্যানাগৌড়ার। তথ্য অনুযায়ী তিনি উত্তর কর্নাটকের বাসিন্দা। খারকিভের মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ছাত্র। মেডিক্যালের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন তিনি। সুপারমার্কেটে এদিন খাবার কিনতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সময়ে খারকিভে একটি রকেট হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ছাত্র। এই মুহূর্তে তাঁর মরদেহ খারকিভের একটি মর্গে রাখা রয়েছে।

এদিন রাশিয়া সেনার মিসাইল হামলায় খারকিভে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এই তালিকায় নাম রয়েছে এই ভারতীয় পড়ুয়ার। ওখানকার আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান ওলে সিনহুবভ জানিয়েছেন, 'খারকিভের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রশাসনিক ভবনটি ও ভবন সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় এদিন রাশিয়ান সেনারা মিসাইল হামলা চালায়। মারা গিয়েছেন বহু নিরীহ মানুষ'। কিন্তু খারকিভের কতজন মারা গিয়েছেন, সেই বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছুই জানান নি প্রশাসনিক প্রধান। এদিন ২২ বছর বয়সী নবীনের সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক বন্ধুও। তিনিও স্টুডেন্ট কন্ট্রাক্টটর ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

যখনই তারা জিনিস কিনতে এদিন মার্কেটে আসেন তখনই মিসাইল হামলা হয়। নবীনের সঙ্গে এদিন মারা গিয়েছেন তাঁর সেই বন্ধুও। অন্যদিকে তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন জানিয়েছে রুশ সেনার হামলায় ১৪ জন শিশুসহ মৃত্যু হয়েছে ৩৫২ জনের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বড় শহর খারকিভের বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকা। এদিন এই হামলার পর কিয়েভকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। পাশাপাশি অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের দূতদের ফোন করেছেন। যাতে ইউক্রেনের খারকিভ এবং অন্যান্য যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদে বাঁচিয়ে নিয়ে আসা যায়। পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে রাশিয়া এবং ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় দূতদের তরফ থেকে"।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours