অন্য পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন স্বামী। অভিযোগ, স্বামীকে তারই খেসারত দিতে হল প্রাণ দিয়ে। স্ত্রী ও স্ত্রী’র বিশেষ বন্ধু চক্রান্ত করে এই খুন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় আকরার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায়।
নিহত যুবকের নাম মহম্মদ শাহিদ। তাঁর পরিবারের দাবি, শাহিদের বিয়ের অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, মাস তিনেক হল অপর এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান শাহিদের স্ত্রী। এরপর থেকেই স্ত্রীর আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করছিলেন তিনি। কথায় কথায় বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যেতেন। শাহিদের আত্মীয়রা জানান, সাদ্দাম শেখ নামে এক যুবকের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন বাড়ির বউ। স্বামীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করতেন বলেই অভিযোগ।
এরইমধ্যে শাহিদ জানতে পারেন সোমবার তাঁর স্ত্রী স্থানীয় টুটারকল মাজারের কাছে একটি জায়গায় সাদ্দামের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। এদিন শাহিদ ঠিক করেছিল হাতেনাতে ধরবেন বউকে। সেইমতো বউয়ের পিছু নেন। শাহিদের পরিবারের দাবি, টুটারকলে একটি ঘরের মধ্যে সাদ্দাম ও তাঁর স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন শাহিদ। এরপরই স্ত্রীকে সরাসরি প্রশ্ন করতে শুরু করেন। এমনকী তাঁকে বাড়িতে যাওয়ার জন্যও বলতে থাকেন। অভিযোগ, স্ত্রী-স্বামীর মধ্যে কথা কাটাকাটি চলাকালীনই সাদ্দাম হঠাত্ একটি ছুরি বের করেন। সরাসরি তা শাহিদের গলায় চালিয়ে দেন বলে দাবি শাহিদের বড় জামাইবাবু সুলতান আহমেদের। শুধু সাদ্দাম নন, এই ঘটনায় আরও চার পাঁচজন যুক্ত বলেও দাবি করেন তিনি।
নিহতের জামাইবাবু সুলতান আহমেদ বলেন, “আমার শ্যালক খুন হয়েছে। তার বউয়ের সঙ্গে গত তিন মাস ধরে সাদ্দামের প্রেম চলছিল। সোমবার ওর বউ দেখা করতে গিয়েছিল সাদ্দামের সঙ্গে। শ্যালক সেটা জানতে পেরে গিয়ে বউয়ের পিছু পিছু যায়। হাতেনাতে ধরে ফেলে দু’জনকে। এরপরই সাদ্দাম শ্যালককে আটকে ফেলে। ছুরি দিয়ে গলায়, পেটে আঘাত করতে থাকে। এই ঘটনায় আরও অনেকের হাত রয়েছে। সাদ্দামের সঙ্গে চারজন ছিল। শ্যালকের বউয়ের ভাইও যুক্ত রয়েছে এই কাণ্ডে। পুলিশ শ্যালকের বউ আর সাদ্দামকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। আমার শ্যালক ওদের কুকীর্তি দেখে ফেলার পর বউকে সেখান থেকে আনতে চেয়েছিল। তাই জন্যই ওকে মরতে হল। আমরা এর বিচার চাই।”
এদিকে এই ঘটনার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শাহিদের পরিবার। এলাকার লোকজনও পথে নামেন। সাদ্দাম ও শাহিদের স্ত্রীকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে রবীন্দ্রনগর থানার গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শাহিদের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় মূল দুই অভিযুক্তকে রবীন্দ্রনগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। যদিও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours