ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়কে। সোমবার তাঁর চারদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল হাওড়া আদালত। শনিবার হাওড়ার পাঁচলায় যে ঘটনা ঘটে তার পরই মীনাক্ষি-সহ ১৬ জন বাম কর্মী সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়।সোমবার তাঁদের হাওড়া আদালতে তোলা হলে চারদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়-সহ ধৃত অন্যান্যদের আইনজীবীদের বক্তব্য, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১৪টি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে খুনের চেষ্টার ধারাও।

অন্যদিকে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, মীনাক্ষি-সহ বাকিদের পুলিশের লকআপে নানাভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। এরপরই মেডিকেল রিপোর্ট করানো হয়। সোমবার সেই রিপোর্টও আদালতে জমা পড়ে। সেখানে মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের শরীরে ৬টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবীরা। পাশাপাশি অন্যান্য যে বাম কর্মী সমর্থকরা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁদের শরীরেও গুরুতর আঘাত রয়েছে এবং পুলিশি লকআপে দুই যুব কর্মী মাফুজ খান এবং সুজয় চক্রবর্তীকে অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। আপাতত চারদিন জেল হেফাজতে থাকবেন এই বাম কর্মী সমর্থকরা।

আলিপুর সংশোধনাগারে থাকতে হবে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়কেও। আগামী ৪ মার্চ ফের আদালতে তোলা হবে। মীনাক্ষি-সহ ১৬ জনের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে শহর কলকাতা। মঙ্গলবারও কলেজ স্ট্রিটে ছাত্র যুব সমাবেশ করবে সিপিআইএম।

রবিবার হাওড়া কোর্টে তোলার সময়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল সকলেই মানসিক ও শারীরিক ভাবে ফিট। কিন্তু ধৃতদের আইনজীবীরা পুনরায় মেডিকেল রিপোর্ট করার জন্য দাবি করেন। বিচারক পুনরায় রিপোর্ট করার কথা বলেন। সেই অনুসারে সোমবার নতুন রিপোর্ট আসে। সেখানেই আঘাতের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মীনাক্ষিদের আইনজীবীরা।

আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে গত শনিবার পথে নামে বাম ছাত্র যুবরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার পাঁচলা। ইটবৃষ্টিতে আহত হন বেশ কয়েকজন। অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে যে পুলিশ কর্মীরা দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই পাল্টা পুলিশও প্রতিরোধে নামে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

বাম ছাত্রনেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়কে মিছিল থেকে আটক করে পুলিশ। টানতে টানতে তাঁকে পুলিশ সুপারের অফিসের ভিতর নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ঘিরে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। বিশাল পুলিশবাহিনী রাস্তায় নামে। এরপরই আরও উত্তেজনা ছড়ায়। একের পর এক বাম ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেখানে নাম ছিল ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়েরও।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours