উনি একজন শান্তশিষ্ঠ পত্নিনিষ্ঠ ভদ্রলোক! তবে একজন পত্নী নন। একেবারে ১৪ পত্নী তাঁর। চিকিত্সক সেজে কখনও ফাঁদে ফেলেছেন চিকিত্সক, নার্সকে, কখনও আবার আইনজীবী, আধাসেনায় কর্মরত মহিলা ও উচ্চ শিক্ষিত মহিলাদের। গত দুই দশক ধরে কখনও দিল্লি, কখনও পঞ্জাব, অসম, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা-সহ সাত রাজ্যে ১৪ জনকে বিয়ে করেন ষাটের পৌঢ়।এত কাণ্ডের পর অবশেষে পুলিশের জালে গুণধর।অভিযুক্ত পৌঢ়র নাম বিধুপ্রকাশ সোয়েন। বাড়ি ওডিশার কেন্দ্রাপাড়ার পাতকুড়ায়। জানা গিয়েছে, মূলত মাঝবয়সী অবিবাহিতা বা ডিভর্সি মহিলারাই ছিলেন তাঁর টার্গেট। বাকপটু বিধুপ্রকাশ নিজেকে চিকিত্সক পরিচয় দিয়ে ভাব জমাতেন মহিলাদের সঙ্গে। তাঁর কথায় জালে ফাঁদে পা দেন শিক্ষিত মহিলারাও। আর এই ভাবেই লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা করতেন তিনি।
ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার উমাশঙ্কর দাস জানিয়েছেন, ওড়িশা ছাড়াও দিল্লি, পাঞ্জাব, অসম, ঝাড়খণ্ড সহ মোট ৭ রাজ্যে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন বিধুপ্রকাশ। নিজেকে অধিকাংশ সময় চিকিত্সক হিসাবেই পরিচয় দিতেন তিনি। তবে কখনও কখনও সরকারি অফিসারের পরিচয়ও দিতেন। বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইটগুলিতে ঢু দিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পাততেন বিধুপ্রকাশ। এর পর মিষ্টি মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে ফাঁসাতেন মহিলাদের। তবে যে কোনও মহিলা নয়, তাঁর টার্গেট থাকত উচ্চশিক্ষিত মহিলা যাঁরা, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার চাকরিরত। মূল উদ্দেশ্য ছিল বিয়ে করে তাঁদের টাকা পয়সা আত্মসাত্ করা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি টাকা পয়সা হাতিয়ে পালাতে সক্ষম হন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে এক শিক্ষিকা ভুবনেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ২০১৮ সালে এক ব্যক্তি তাঁকে দিল্লি থেকে বিয়ে করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে আসেন। এর আগেও তিনি বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ। কেঁচো খুড়তে বেড়িয়ে আসে কেউটে। প্রতারণার পর্দা ফাঁস হতেই সোমবার অভিযুক্ত পৌঢ়কে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে প্রথম বিয়ে তাঁর। এক পর ২০২০ পর্যন্ত ১৪টি বিয়ে করেন তিনি। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, শুধু বিয়ে করে প্রতারণা করাই নয়, আরও নানা রকম প্রতারণার কাজে জড়িত ছিলেন ওই ব্যক্তি। এর আগে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতানোর অভিযোগে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। বিধুপ্রকাশ সোয়েনের কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours