কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে হেলমেট বিহীন মদ্যপ 3 বাইক আরোহীর 'দাদাগিরি' । গ্রেফতার 3 অভিযুক্ত । অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি তারা তৃণমূল সমর্থক । অভিযোগ, কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছে বাইক ছাড়ার জন্য । দু'পক্ষের চিত্কার চেঁচামেচিতে গ্রামের রাস্তায় লোকজনও জমে যায় (Civic Volunteer assaulted)।
মালদা, 21 ফেব্রুয়ারি : মদ্যপ অবস্থায় হেলমেট ছাড়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন 3 বাইক আরোহী । ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অপরাধে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার তাদের গাড়ি থামাতে বলেন । এরপরেই বিপত্তি শুরু । তিন বাইক আরোহীর দাবি, তাঁরা তৃণমূলের কর্মী । সিভিক ভলান্টিয়ার তারপরও তাঁদের কাছে বাইক ছাড়ার জন্য টাকা দাবি করেছেন । কয়েকজনকে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের ইউনিফর্মের কলার ধরে ধস্তাধস্তিও করতে দেখা যায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ (Malda Police Arrested 3 Accused) । অবশেষে 3 বাইক আরোহীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে ।
প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে হরিশ্চন্দ্রপুর শহিদ মোড়ে ডিউটি করছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কয়েকজন সিভিক ভলেন্টিয়ার । সেইসময় হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের দাঁড় করিয়ে সতর্ক করছিলেন । সেই রাস্তা দিয়ে বাইক চালিয়ে আসছিলেন মাসুদ আলম, মহম্মদ আলি ও নাজিমুল নামে তিন যুবক । তাঁদের 3 জনেরই মাথায় হেলমেট ছিল না । তা দেখে তাঁদের বাইক আটকান রাকেশ পাশওয়ান নামে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার । এরপরেই শুরু হয় বচসা ও ধস্তাধস্তি ।
তিন বাইক আরোহীর অভিযোগ, সেই সময়ে কোনও পুলিশ অফিসার উপস্থিত ছিলেন না । তা সত্ত্বেও সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদের বাইক আটকায় । এমনকি বাইক ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে দু'হাজার টাকা দাবিও করেছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার । টাকা না দেওয়ায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদের উপর চড়াও হন ।
আলাউদ্দিন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, "বারদুয়ারি থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর আসছিলাম । শহিদ মোড়ে দেখি, প্রচুর মানুষের ভিড় । সবাই বলছে, সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক ছাড়ার জন্য টাকা নিচ্ছে । সেখানে কোনও পুলিশ অফিসারও ছিল না । অফিসার ছাড়া সিভিক ভলান্টিয়ার কোনও গাড়ি ধরতে পারে না । সিভিক ভলান্টিয়ারকে কেউ ধাক্কাধাক্কি করেনি । তবে এখানে পুলিশ দিনে 50টি গাড়ি ধরে । তার মধ্যে মাত্র পাঁচটির চালান কাটে । বাকি গাড়িগুলি টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।"
সিভিক বানিয়েছে মমতা সরকার, কটাক্ষ শুভেন্দুর
যদিও ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার রাকেশ পাশওয়ান জানিয়েছেন, "অফিসারের উপস্থিতিতেই আমি হেলমেটহীন ওই বাইকটি আটক করেছিলাম । কিন্তু বাইক আরোহীরা গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে । আমি তাদের কথা না শোনায় তারা আমাকে ধাক্কাধাক্কিও করে । আমার বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিথ্যে।" হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস জানিয়েছেন, ওই 3 বাইক আরোহীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তাদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
এই প্রসঙ্গেই তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুরের অঞ্চল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্ত বলেন, "আমরা শুনেছি, গাড়ি আটকে সিভিক ভলান্টিয়ার নাকি টাকা চেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিন বাইক আরোহী । যারা ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর করেছে, তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল । পুলিশের কাছে আমার আবেদন, ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এখানে দলের কোনও বিষয় নয় । কর্মরত অবস্থায় পুলিশ কিংবা সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর হাত তোলা অপরাধ । তেমনই উর্দি পরে টাকা দাবি করাও অপরাধ । তাই আমি এই ঘটনায় যথাযথ পুলিশি তদন্তের দাবি তুলছি (Police Started Further Investigation)।"
Post A Comment:
0 comments so far,add yours