গঙ্গাসাগর মেলা হবে নাকি এ বছরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে সে নিয়ে আদালতে জোর সওয়াল জবাব চলছে। আজ বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা ছিল রাজ্য সরকারের। হাইকোর্টে এদিনের সওয়াল জবাব শুরু হতেই সরকার পক্ষের তরফে জানানো হয়, মেলা করার পক্ষেই রয়েছে সরকার।
সেক্ষেত্রে সমস্তরকম কোভিড বিধি মেনেই মেলা করার পক্ষে রয়েছে সরকার। শুনানি চলার সময় রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, হলফনামা জমা দিতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে মেলা হোক এমনটাই চাইছে সরকার। সেক্ষেত্রে মেলা হবে কোভিড বিধি মেনে। জেলা প্রশাসনের তরফে যা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল সবই মেনে চলা হবে। সরকারি আইনজীবী আরও বলেন, সাগর এলাকা ও কলকাতায় টিকাকরণ ৯০ শতাংশ হয়ে গেছে। সাগরে করোনা গ্রাফও নিম্নমুখী। সাধারণত গঙ্গাসাগর বেলা ২ কিলোমিটার অবধি হয়। গোটাটাই ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। কোভিড টেস্ট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সেফ হোম, হাসপাতাল, এবং র্যাপিড আন্টিজেন টেস্ট, আরটি-পিসিআর টেস্ট করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, স্যালাইনের ব্যবস্থা থাকছে, সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে, স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী পূর্নার্থীদের মেলা প্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। রাজ্যে করোনা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করা উচিত এই আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন চিকিত্সক অভিনন্দন মণ্ডল। বুধবার সেই মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, গঙ্গাসাগর মেলায় প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ আসেন। গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে আট থেকে নয় লাখ পুণ্যার্থী এসেছিলেন। তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক জমায়েত করতে পারবেন না। গঙ্গাসাগর মেলাও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। কাজেই এই মেলায় অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কী ভাবে। তিনি আরও দাবি করেন, গত কয়েক দিনে যে হারে কোভিড সংক্রমণ বেড়েছে রাজ্যে, এমন পরিস্থিতিতে মেলা হলে বিপদ আরও বাড়বে। মামলাকীর প্রশ্ন, শুধুমাত্র টালিউডের চারজন অভিনেতা করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব স্থগিত করেছে রাজ্য সরকার, তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনে সেটা নিয়ে রাজ্যের কোন মাথাব্যথা নেই কেন? চিকিত্সকের বক্তব্য, সাগর মেলায় এসে আক্রান্ত হলে তার থেকে সংক্রমণ বিশাল আকারে ছড়িয়ে পড়বে। এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে চিকিত্সা দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে ভেঙে পড়তে পারে চিকিত্সা পরিষেবা। কারণ লাগাতার পরিষেবা দিতে দিয়ে চিকিত্সকরাও এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। মামলাকারীর আর্জি মহামারীর ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে এবারের মতো গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখা হোক।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours