বাড়িও ফেরার পথ ধরেছিলেন তাঁরা। চলেও এসেছিলেন বাড়ির কাছে। কিন্তু তবুও আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁদের। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমহণীতে বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটে যাওয়া ট্রেন দুর্ঘটনাই কেড়ে নিল তাঁদের প্রাণ।


গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় যে ৯জন মারা গিয়েছেন বলে রেলমন্ত্রক জানিয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার ৩ যুবক। এরা হলেন কোচবিহার-১ ব্লকের চান্দামারি এলাকার বাসিন্দা চিরঞ্জিত বর্মণ(২৩), মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের ফাঁসিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নবাব আলি(৪০) ও কোচবিহার-১ ব্লকের ফলিমারি দেওয়ানবস এলাকার বাসিন্দা সুভাস রায়(৩৮)। এরমধ্যে নবাব আলির দেহ ইতিমধ্যেই তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। অন্য দুজনের দেহ নিয়ে আসার জন্য তাঁদের আত্মীয়স্বজনরা জলপাইগুড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

এই ৩জনই রাজস্থানের জয়পুরে শ্রমিকের কাজ করতেন। পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষ্যে এরা বাড়ি ফিরছিলেন। পরিকল্পনা ছিল পৌষসংক্রান্তির দিন বাড়ির সবার সঙ্গে বসে পিঠেপুলি খাওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাড়ির খুব কাছে চলে এসেও তাঁদের আর বাড়ি ফেরা হল না। খাওয়া হল না পিঠেপুলিও। তাঁদের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌছাতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কোচবিহার-১ ব্লকের সাতমাইল এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল শ্রমিক ও মজদুর সংগঠনের জেলা সহ সভাপতি অমল রায় জানিয়েছেন, 'আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। কোচবিহার-১ ব্লকের মৃত দুই জনের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সকলেই শোকস্তব্ধ। দেহ নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।' তবে এরই মাঝে প্রশ্ন উঠেছে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নিয়ে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু মৃত ৩ যুবকের পরিবারের প্রশ্ন এখন ৫ লক্ষ টাকায় কী হয়? বাড়ির রোজগেরে সদস্য মারা গেলে তা কী মাত্র ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণে পূরণ হওইয়া সম্ভব? যদিও এই বিষয়ে রেলের আধিকারিকেরা বিষয়টি রেলমন্ত্রকের ঘাড়েই চাপিয়েছে। কেননা এই ধরনের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নিয়ে রেলমন্ত্রকই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন, যার সঙ্গে রেলমন্ত্রী নিজে জড়িত থাকলেও নীচুতলার রেলের আধিকারিকেরা যুক্ত থাকেন না।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours