খাল কেটে কুমির আনা এই বাংলা প্রবাদটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। ঠিক এই প্রবাদের মতোই বাস্তব জীবনেও নিজেদের প্রতারণার ব্যবসায় ডেকে এনে কুমির লুকিয়েছে জামতাড়া গ্যাং এর সদস্যরা। প্রতারিতদের লিস্টে তাঁরা নাম রেখেছিলেন এথিক্যাল হ্যাকার সন্দীপ সেনগুপ্তর।


ব্যাস! ফাঁদ পাততে এসে নিজেই ফাঁসলেন ওই সদস্য। সিম কার্ডের KYC এর নাম করে ফোন করা হয় তাকে। ফোনে ডাউনলোড করতে বলা হয় একটি রিমোট অ্যাকসেস অ্যাপ্লিকেশন।

ঠিক কী ফাঁদ পেতে ছিল ওই জামতাড়া গ্যাং এর সদস্য?

ফের শহরে মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার নাম করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে জামতাড়া গ্যাং। এবার সেই প্রতারকদের হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং এথিক্যাল হ্যাকার সন্দীপ সেনগুপ্ত। তাঁর কাছে একটি অচেনা নাম্বারে ফোন আসে যারা তাঁর ফোনের সিম কার্ডের কেওয়াইসি আপডেটের জন্য তাকে 'টিম ভিউয়ার কুইক সাপোর্ট' নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন ফোনে ইন্সটল করতে বলেন।

সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, এই ধরনের টিম ভিউয়ার কুইক সাপোর্ট বা এনি ডেস্ক অ্যাপ্লিকেশনগুলি এক ধরনের রিমোট এক্সেস ডেক্সটপ অ্যাপ্লিকেশন। যা ইতিমধ্যে ফোনের অ্যাপ্লিকেশন হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। যখনই এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলি একজন ব্যক্তি নিজের ফোনে ইন্সটল করেন এবং সেই অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে থাকা পিন নম্বরটি সামনের কোন ব্যক্তির সাথে শেয়ার করেন তখনই ঘটে বিপত্তি। সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তি আপনার ফোনের সমস্ত রকম তথ্য নিজেই বের করে নিতে পারবে। কারণ সেই সময় আপনার ফোন আপনার হাতে থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ঐ ব্যক্তি। যার সাহায্যে খুব সহজেই মুহূর্তের মধ্যে ফোনে থাকা বিভিন্ন পাসওয়ার্ড, নাম্বার, ব্যাংকের তথ্য এমনকি ছবি ভিডিও হাতিয়ে নিতে পারে।

কীভাবে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচা যাবে?

সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত এ বিষয়ে বলেন, যখনই কোনো অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসবে সিমের আপডেট, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের আপডেট কিংবা কোনো প্রকার লাইফ ইন্সরেন্স সার্ভিসের ব্যাপারে তখনই সচেতন হওয়া উচিত। যদি ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি এই ধরনের রিমোট এক্সেস সফটওয়্যার গুলি ফোনে ইন্সটল করার কথা বলেন তখনই মনে করতে হবে সামনে ফাঁদ পাতা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানানো দরকার। সাথেই ফোনের ডাটা অফ করে দেওয়া উচিত। এতে যে লিঙ্কটি ক্রিয়েট হবে তা ইন্টারনেটের অভাবে নষ্ট হয়ে যাবে।

এদিন জামতাড়া গ্যাং এর ওই সদস্য যখন বুঝতে পারেন যে তিনি নিজের ফাঁদেই নিজে আটকে গেছেন তখন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন সন্দীপ সেনগুপ্তকে। এই বিষয়টি নিয়ে যদিও কলকাতা পুলিশের সাইবারক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours