ভোট -পরবর্তী হিংসার তদন্তে কোথাও গ্রেফতার হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। আবার কোথাও সিবিআইয়ের মামলার প্রেক্ষিতে জেল হেফাজতে রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। যার জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিষেবা পেতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।এ ছবি জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামের।
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি নামে এক বিজেপি কর্মী খুন হন। হাইকোর্টের নির্দেশে ওই মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। ইতিমধ্যে একটি মামলা রুজু করেছে তারা। তদন্তকারী সংস্থা ১১জন তৃণমূল নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আপাতত তারা সকলেই জেল হেফাজতে রয়েছে। ধৃতদের মধ্যে তিন জন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। যেমন কেন্দামারি পঞ্চায়েতের সদস্য তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী শেখ সাহাবুদ্দিন, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী শেখ বায়েতুল এবং মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নান্টু প্রধান। স্থানীয় সূত্রের খবর, মহম্মদপুর ছাড়া কেন্দামারি এবং নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত বকলমে পরিচালনা করতেন সাহাবুদ্দিন এবং বায়েতুল। এরা জেল হেফাজতে থাকায় পঞ্চায়েতের কাজে সমস্যা হচ্ছে।

কেন্দামারি এলাকার কালীর বাজারের এক বাসিন্দা বলেন, ''আধার কার্ড সংশোধনের জন্য পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে একটি শংসাপত্র আনতে গিয়েছিলাম। প্রধান জেল হেফাজতে থাকা তাঁর স্বামীর জামিনের জন্য ছোটাছুটি করছেন বলে অফিসে গিয়ে শুনলাম। একাধিকবার গিয়েও কাজ হয়নি।'' উল্লেখ্য, নিজের বিধানসভা এলাকার একাধিক পঞ্চায়েতর প্রধান তথা শাসকদলের নেতাদের জেল হেফাজতে থাকার বিষয় নিয়ে শুক্রবারই কটাক্ষ করেছিলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।

একই সমস্যার কথা গিয়েছে নন্দীগ্রাম এবং মহম্মদপুরেও। গত কয়েকদিন ধরে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সঞ্চালক কমিটির সভাও হয়নি। এদিকে, কিছুদিনের মধ্যেই শীতকালীন সংসদ সভা শুরু হবে পঞ্চায়েত ভিত্তিক এলাকায়। এভাবে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বা পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রকেরা জেল হেফাজতে থাকলে উন্নয়ন সভা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূলেরই একাংশ।

পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য বিকল্প উপায় নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেব প্রসাদ মণ্ডল বলেন, ''পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় জটিলতা তৈরি করার জন্য শুভেন্দু নানা ধরনের কার্যকলাপ করছেন। তবে পঞ্চায়েতের কাজ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য উপপ্রধান দের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।'' দলের ওই নির্দেশ শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা কীভাবে পালন করছেন, সে ব্যাপারে জানতে নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও'কে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। ওই তিনটি পঞ্চায়েতের উপপ্রধানদের ফোন করেও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।

 
খবর সূত্র-আনন্দবাজার পত্রিকা 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours