সাহসিকতার আরেক নাম অভিনন্দন বর্তমান। সাল ২০১৯। পাকিস্তানের হাতে বন্দি হয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার সাহসী এই উইং কমান্ডার। এমনকি আটক হওয়ার পরও নিজের কর্তব্যের প্রতি অবিচল ছিলেন তিনি। গোপন তথ্য জানতে তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও সে তাঁর কর্তব্যে থেকে সরে আসেননি। প্রাণ সংশয় হতে পারে জেনেও কোনো রকম তথ্য তাদের বলতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিনন্দন।
গোটা দেশবাসীর চোখ তখন টিভির পর্দায়। কেউ বা ঠাকুরের কাছে প্রার্থনায়রত। আবার কেউ গোঁ ধরে বসেছিল যতক্ষণ না অভিনন্দনকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে ততক্ষণ মুখে অন্ন তুলবেননা। তাঁর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছিল গোটা দেশ। অভিনন্দনের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের পাশাপাশি ভারত থেকেও ব্যাপক চাপ তৈরি করা হয়। এরপরই কার্যত বাধ্য হয়েই পাকিস্তান তাকে মুক্তি দেয়।
এবার সেই অভিনন্দন বর্তমানকে উন্নীত করা হল গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায়। তাঁকে ইতিমধ্য়েই সৌর্য্য চক্র উপাধিতেও ভূষিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় বায়ু সেনাতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদটি ভারতীয় সেনার কর্ণেল মর্যাদার সমকক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪০ জনের বেশি জওয়ান। পরে তাকেই কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষে জড়ায়। এক পর্যায়ে ভারতের একটি যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে ঢুকে পড়লে সেটিকে ভূপাতিত করে পাাকিস্তান বাহিনী। আর যুদ্ধবিমানের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করে রাখে তারা। সেই ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শান্তির নিদর্শনস্বরূপ তাকে মুক্তি দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
এদিকে অতীতে অত্যন্ত বীরত্বের নিদর্শন তৈরি করেছিলেন তিনি। তার মিগ-২১ ফাইটার প্লেনটিকে গুলি করে নামিয়ে ফেলেছিল শত্রুপক্ষ। তার পূর্বে শত্রুপক্ষের এফ-১৬ প্লেনটি নামিয়ে ফেলেন অভিনন্দন।
১ মার্চ জেনিভা চুক্তি অনুসারে অভিনন্দনকে মুক্তি দেয় পাক সেনা। সেই বছরই তিনি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ যুদ্ধকালীন বীরত্ব পদক 'বীর চক্রে' ভূষিত হন। এবার তাকে উন্নীত করা হল গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours