কপাল ফেটে চৌচির। মাথার তালু দুমড়ে গিয়েছে। মাথার পিছনের অংশও ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। সেই রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা মুখ। শুক্রবার মধ্যরাতে হরিদেবপুর থানা এলাকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডের একটি বাতিস্তম্ভে সজোরে মোটরবাইক ধাক্কা মারার পরে এমনই অবস্থা হয়েছিল চালকের। বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্যামল দাস (২৩) নামের ওই মোটরবাইক চালককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা।আহত হন ওই বাইকের অন্য আরোহীও। তাঁকে
অবশ্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শ্যামলের বাড়ি হরিদেবপুর থানার কেওড়াপুকুর রথগলি এলাকায়। পেশায় অ্যাম্বুল্যান্সের চালক শ্যামল বছর দুয়েক আগে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর একটি বছর দেড়েকের মেয়ে রয়েছে। বাবা-মা, দাদা-বৌদির সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। শ্যামলের দাদা শ্যামসুন্দর দাস জানান, শুক্রবার রাতে পাড়ার মোড়েই আড্ডা দিচ্ছিলেন শ্যামল। রাত বারোটা নাগাদ বন্ধু, বছর ছাব্বিশের কার্তিক নস্করের সঙ্গে নিজের মোটরবাইকে ঘুরতে বেরোন। পুলিশ জানায়, চালক ও যাত্রী, কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। দু'জনেই নেশাগ্রস্ত ছিলেন। বেপরোয়া গতিতে চালানো মোটরবাইকের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে শ্যামল বাতিস্তম্ভে সরাসরি ধাক্কা মারেন। তাঁর মাথাও সরাসরি ধাক্কা খায় বাতিস্তম্ভে। এক
প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে বলেছেন, ''বাইকটি এত জোরে চলছিল যে, ধাক্কা লাগায় বাতিস্তম্ভটিও দুমড়ে যায়।'' পুলিশ দু'জনকে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্যামলকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং অন্য জনকে পাঠানো হয় বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই বছর দেড়েকের মেয়ে সায়ন্তিকাকে আগলে কেঁদে চলেছেন শ্যামলের স্ত্রী শিল্পা দাস। অস্ফুটে শুধু বললেন, ''বার বার বলত দায়িত্বশীল চালক না হলে অ্যাম্বুল্যান্স চালানো যায় না। গাড়ি চালানোর আগে কখনও নেশা করত না। মোটরবাইকে বসে সেই সব দায়িত্বই কি ভুলে গেল?''
Source- আনন্দবাজার পত্রিকা
Post A Comment:
0 comments so far,add yours