নালার মধ্যে উল্টে পড়ে রয়েছে দেহ। কুর্তিটা প্রায় পেটের ওপর উঠে গিয়েছে। হাতে শাখা-পলা, কপালে সিঁদুর। হিল জুতোর একটা পায়ে আরেকটা নর্দমা। কপাল ফেটে রক্ত চুইয়ে বেরোচ্ছে। পরনের জামা কাপড় ভেজা। চা বাগানের ভিতর এক নর্দমায় ঠিক এই ভাবেই উদ্ধার হয় মহিলার দেহ।ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) কোতোয়ালির জয়পুর চা বাগানে। মৃতের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। পুলিশ গিয়ে দেহটিকে উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির কোতোলায়িতে জয়পুর চা বাগানে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। তখন বাগানের ধারে এক নর্দমায় তাঁদের চোখ পড়ে। তাতে জল ছিল না বেশি। গোড়ালি ডোবা জলের মধ্যে পড়েছিল দেহটি। প্রথমে তাঁরা চমকে উঠেছিলেন। মাথার বাঁ অংশটা থ্যাতলানো ছিল। রক্ত বেরোচ্ছিল সেখান থেকে।
খবর চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় চা বাগানে। অনান্য শ্রমিকরাও দেহ দেখতে চলে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ কর্তারা।
চা শ্রমিকদের অনেকেই মনে করছেন, হতে পারে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে। তবে মহিলা যে ওই এলাকার নন, তা তাঁরা পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়েছেন। মহিলা ওই চা বাগানে ঘুরতে এসেছিলেন নাকি আশেপাশের এলাকারই বাসিন্দা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, “মহিলার পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ একটা ব্যাগ উদ্ধার করেছে। সেখানে একটা কাগজ ছিল। তাতে পাণ্ডাপাড়া লেখা ছিল। এবার ওই মহিলা পাণ্ডাপাড়ার বাসিন্দা কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।” জলপাইগুড়ি থেকে বারো-তেরো কিলোমিটার দূরে পাণ্ডাপাড়া এলাকাতেই ওই মহিলার বাড়ি কিনা, তা ওই কাগজের সূত্র ধরে খুঁজে বার করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “আমরা তো শুনলাম মার্ডার হয়েছে। তবে তার আগে তাঁর ওপর অত্যাচার হয়েছে কিনা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে চা বাগানের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। স্বাভাবিকভাবেই একটু আতঙ্কিত এখানকার বাসিন্দারা।”
পুলিশ জানিয়েছে, “এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মহিলার ব্যাগ থেকে কিছু কাগজ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি থেকে দেখা যাক কোনও সূত্র মেলে কিনা। তবে ধর্ষণ করে খুন কিনা, তা ময়নাতদন্তের পরই বোঝা যাবে।” ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করেই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours