মাটির নিচের পাতাল রেলের নানান স্টেশন মহানগরীর অন্যতম জনপ্রিয় সুইসাইড পয়েন্ট হিসাবে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়তে চলেছে শহরের কিছু উড়ালপুলেরও। এই আশঙ্কা তৈরি হয়ে গেল রবি সকালের এক ঘটনার জেরে। এদিন সাতসকালে কলকাতার মা উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিত্‍সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সোয়া ৬টা নাগাদ মিলন মেলা গেটের সামনে মা উড়ালপুলের গড়িয়া র‍্যাম্পের ওপর মোটরবাইক, হেলমেট রেখে নীচে ঝাঁপ দেন বছর ছাপান্নর প্রণব কুণ্ডু। লেকটাউনের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় মন্দা চলছিল বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। আত্মহত্যার সঙ্গে তার কোনও যোগ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। তবে এই ঘটনা কলকাতা পুলিশের অন্দরে বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেননা কলকাতার মেট্রোরেল যেভাবে একশ্রেনীর মানুষের কাছে আত্মহত্যা করার অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছিল এখন সেই তালিকায় যদি মা উড়ালপুলের নামও জুড়ে যায় কিংবা শহরের অনান্য উড়ালপুলেও যদি এই ধরনের ঘটনা শুরু হয়ে যায় তাহলে শহরের গতি তো থমকাবেই, সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে। পাতালরেলে আত্মহত্যার ঘটনা ঠেকাতে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো বা অনান্য মেট্রো প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মে স্ক্রিন ডোর লাগানো হচ্ছে। কিন্তু উড়ালপুলে এই ধরনের ব্যবস্থা করার কার্যত সম্ভবই নয়। এখন শহরের মানুষের মধ্যে উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বেড়ে চললে পুলিশের ওপর বাড়তি চাপ পড়তে বাধ্য।

তবে মা ফ্লাইওভারে এখন ফেন্সিং দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মূলত চিনা মাঞ্জা থেকে বিপদ ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার জেরে রাত ১১টা থেকে, ভোর ৫টা পর্যন্ত, বন্ধ থাকছে উড়ালপুলের ওপর যান চলাচল। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবত্‍ থাকবে মা উড়ালপুলের ওপর। সায়েন্স সিটি থেকে পার্ক সার্কাসমুখী লেনের বাঁদিক ঘেঁষে, ফ্লাইওভারের ৯০০ মিটারের ধারে, বসানো হচ্ছে বেষ্টনী। তবে এবার আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে চললে কার্যত গোটা ফ্লাইওভারকেই বেষ্টনি দিয়ে বাঁধতে বাধ্য হবে কেএমডি এ কর্তৃপক্ষ।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours