নিত্য অশান্তি করতেন স্বামী। ঝগড়া করে বাপের বাড়ি চলে যান স্ত্রী। ভাইয়ের বউকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরানোর জন্য যান ভাসুর। আর ভাইয়ের স্ত্রীয়ের মুখ থেকে যা শুনলেন, তাতে রীতিমতো গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তাঁর। মাকে নাকি খুন করে ঘরেই মাটি খুঁজে পুঁতে রেখেছেন তাঁর স্বামী। ভাসুরের কাছে বিস্ফোরক দাবি করলেন স্ত্রী।

এবং ঘটনার কথা জানালে তাঁর সঙ্গেও তেমনটা ঘটবে বলে ভয় দেখাতেন স্বামী। রোমহর্ষক ঘটনা বর্ধমান শহরের হাটদেওয়ান পিরতলার ক্যানেলপাড় এলাকায়। অভিযুক্ত নয়ন শেখকে বর্ধমান থানার পুলিশ আটক করেছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে আচমকাই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান নয়নের মা সুখবানা বিবি। বাবার মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। নয়নের এক দাদা রয়েছেন। তাঁরা সকলেই মাকে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ করেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়, আত্মীয়দের বাড়িতেও খোঁজ নেওয়া হয়। খোঁজা হয় আশেপাশের বাড়িগুলিতেও। কিন্তু সে সময় থানাতেও মিসিং ডায়েরি করা হয়েছিল।

পুলিশের তরফে তেমন কোনও ‘ক্লু’ সে সময় মেলেনি। পরে ধীরে ধীরে সেই কেস চাপা পড়ে যায়। হাল ছেড়ে দেন পরিবারের সদস্যরাও। ভেবেছিলেন, মা হয়তো কোথাও চলে গিয়ে থাকতে পারেন পারিবারিক অশান্তিতে। রাগ কমলে চলে আসবেন। কিন্তু এই ভাবে কেটে যায় তিন বছর।

বাড়িতে স্ত্রী ও দাদাকে নিয়ে থাকতেন নয়ন। তবে স্ত্রীর সঙ্গেও মাঝেমধ্যে অশান্তি হয় তাঁর। সেটি ইদানীং খুব বেড়ে গিয়েছিল। এরই মাঝে এক দিন অশান্তি করে বাড়ি থেকে বাপেরবাড়ি চলে যান নয়নের স্ত্রী। তাও অনেকদিন হয়ে যায়।

নয়নের দাদা শেখ রাজা ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে তাঁর স্ত্রীকে আানতে যান। শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে অস্বীকার করেন নয়নের স্ত্রী। ভাসুরের কাছে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তাঁর স্বামী তাঁকে খুন করে মাটিতে পুঁতে রাখবেন। এরকম আগেও তাঁকে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

ভাসুরের কাছে তিনি দাবি করেন, নয়নই নাকি তাঁর মাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে রেখেছেন। আর এ কথা জানালে তাঁকেও খুন করার হুমকি দিতেন নয়ন। এরপরই শেখ রাজা পুলিশের দ্বারস্থ হন। আপাতত পুলিশ শেখ নয়নকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পাশাপাশি বাড়ির ভিতর মাটি খোঁড়া শুরু হয়েছে। আদৌ এই অভিযোগ সত্যি কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এক প্রতিবেশী বলেন, “ঘটনাটা ঘটেছে প্রায় আড়াই তিন বছর হয়ে গেল। মা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর বড় ছেলে অনেক খোঁজ করেছে। থানাতেও কেস হয়েছিল। এখন শুনছি মাকে খুন মাটিতে পুঁতে রেখেছে ছোট ছেলে। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হত। স্ত্রী বাপেরবাড়ি চলে গিয়েছিল। স্ত্রীই নাকি এই কথা এখন সব্বাইকে বলেছেন।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ মিললে তদন্ত অন্য ভাবে এগোবে। পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours