গ্রামেগঞ্জে এখনও সর্পকূলের উপদ্রব কমেনি। ফি বছর বিশেষত বর্ষায় বিভিন্ন জায়গায় বিষাক্ত সাপের দংশনে (Snake Bite) মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এর প্রতিকারে একাধিক আধুনিক চিকিত্সা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সর্পদংশনের প্রাথমিক ধাক্কা সামলানোর মতো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এবার সেই যুগান্তকারী আবিষ্কারের দোরগোড়ায় কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (National Medical College)। এখানে তৈরি হওয়া ওষুধ পি ল এ-২ ইনহিবিটারের ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে। নেতৃত্বে ন্যাশনাল মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়। সব ঠিক থাকলে পুজোর পরই শুরু হবে ট্রায়াল।
সাপের ছোবল খাওয়া রোগীকে দেড়ঘণ্টার মধ্যে চিকিত্সা না করালে মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু এমন কোনও ওষুধ (Oral medicine) কি আছে, যা সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে খাওয়ালে প্রাথমিক ধাক্কা অন্তত সামলানো যাবে? এতদিন সেভাবে এ ধরনের ওষুধের খোঁজ ছিল না ভারতে। এবার তার হদিশ মেলা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। আর এই ব্যাপারে পথিকৃত্ বাংলাই। কলকাতার (Kolkata) ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সকরা এমন একটি ওষুধ তৈরি করে ফেলেছেন যা সাপে কাটা রোগীকে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া থেকে প্রাথমিকভাবে রক্ষা করতে সক্ষম, এমনই দাবি তাঁদের। ফলে চিকিত্সা করানোর সময় ও সুযোগ অনেকটা বেড়ে যায়। এ বিষয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়ের কথায়, 'এই ওষুধ প্রয়োগে জীবনের সীমা বাড়াতে পারব। চিকিত্সার সুযোগ দিতে পারব বেশি।'
ই ওষুধ ট্রায়ালের জন্য DCGI-এর অনুমোদন মিলেছে। এখন রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের এথিক্স কমিটির সবুজ সংকেতের অপেক্ষা। তা পাওয়া গেলেই পুজোর পর ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে বলে খবর সূত্রের। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের উপরই তা প্রয়োগ করা হবে। দুটি গ্রুপে ভাগ করে চলবে ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। একদল সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হবে পি ল এ-২ ইনহিবিটার। আরেকদলকে দেওয়া হবে সমগোত্রীয় আরেকটি ওষুধ। তাতে বোঝা সুবিধার হবে, কোনটির কার্যকারিতা কতটা
বিশ্বের মোট চারটি জায়গায় এই ওষুধ নিয়ে ট্রায়াল চলছে। ইউরোপে (Europe) ইঁদুরের উপর এই ট্রায়াল সফল হয়েছে বলে দাবি। সর্প বিশারদ ডাঃ ডিবি মজুমদার জানিয়েছেন, 'সাপে কাটা রোগীকে সুস্থ করতে ওষুধটি কতটা সফল হবে, তা এখনই বলার মতো সময় আসেনি।' সব ঠিক থাকলে অবশ্যই সাপে কাটা রোগীকে প্রাথমিকভাবে সুস্থ করার চাবিকাঠি চলে আসবে চিকিত্সকদের হাতের মুঠোয়। আর রাজ্যের চিকিত্সা পরিষেবার মুকুটে জুড়বে আরেকটি পালক।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours