উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দে এটিএস ট্রেনিং সেন্টার খুলতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। এই দেওবন্দেই অবস্থিত 'দারুল উলুম দেওবন্দ' নামে ভারতের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসাটি রয়েছে। ভারত ছাড়াও পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ এখানে ইসলামি শিক্ষার পাঠ নিতে আসে। যোগী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে যেভাবে তালিবান দৌরাত্ম্য বাড়ছে তাতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্যই দেওবন্দে সন্ত্রাস দমন শাখার একটি কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেওবন্দে এটিএস (অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড) - এর ট্রেনিং সেন্টার খোলার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। বস্তুত মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া সেলের প্রধান শালভ মণি ত্রিপাঠির একটি মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক চলছে। ত্রিপাঠি তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন 'তালিবানি বর্বরতা আবার ফিরে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেওবন্দে শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখতে কম্যান্ডো ট্রেনিং সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।'তবে তালিবানের সঙ্গে দেওবন্দের মুসলিমদের কী সম্পর্ক তা তিনি স্পষ্ট করেননি। ভারতের প্রখ্যাত মাদ্রাসা দারুল উলুম দেওবন্দ। এখান থেকেই দেওবন্দি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ১৮৬৬ সালে ইসলামি পণ্ডিতদের হাতে তৈরি এই মাদ্রাসার শিক্ষক-পড়ুয়াদের বড় অংশ স্বাধীনতা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন এবং দেশভাগের বিরোধিতা করেন। জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ দলটির পিছনে প্রেরণা হিসাবে কাজ করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বহু দেশের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরাই তাঁদের ধর্মীয় পথনির্দেশনার জন্য ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার ওপর নির্ভর করেন। সেখানে অ্যান্ট টেররিস্ট স্কোয়াড গঠনের সিদ্ধান্তকে অনেকেই ইঙ্গিতবাহী এবং স্পর্শকাতর পদক্ষেপ বলে মনে করছেন। যোগী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দেওবন্দে প্রায় দু'হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হবে কম্যান্ডো ট্রেনিং সেন্টার। গোটা রাজ্য থেকে বাছাই করা সন্ত্রাস দমন শাখার অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যের এডিজি (আইনশ-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার বলেছন, অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্সকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্যই এই ট্রেনিং খোলা হচ্ছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অফিসাররা রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। মেরঠ, ভারত-নেপাল সীমান্ত, বাহারাইচ, শ্রাবস্তী, দেওবন্দ ইত্যাদি জায়গাগুলিতে যেখানে জঙ্গি তত্পরতা আগেও ধরা পড়েছে, সেখানে এই কম্যান্ডো বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে। এটিএসের আইজি জিকে গোস্বামী বলেছেন, রাজ্যের সবকটি প্রান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য এটাই হল স্ট্র্যাটেজি। উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম প্রান্তেও সুরক্ষা দরকার। তাঁর মতে, দেওবন্দ লখনৌ শহর থেকে অনেকটাই দূরে। সন্ত্রাসবাদীরা খুব সহজেই এখানে নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারে। সে জন্যই কম্যান্ডো ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণপ্রান্ত স্পেশাল অফিসারদের রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours