কাবুল বিমানবন্দরের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ১০০। জানা গেছে, অন্তত ৯০ জন আফগান মানুষ মারা গেছেন বলে নিশ্চিত খবর মিলেছে। এদের মধ্যে মহিলা তো বটেই রয়েছে বেশ কিছু শিশুও। এছাড়াও নিহত অন্তত ১৩ জন মার্কিন সেনা। জখম কয়েকশো মানুষ। আজ সকালে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইসিস।গোটা বিশ্বই এই হামলার কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে। গতকাল রাতে প্রথমে খবর মিলেছিল, ১৩ জন নিহত হয়েছেন কাবুল বিমানবন্দরের জোড়া-বিস্ফোরণে। তালিবানের তরফে এমনটাই জানা গেছিল। কয়েক ঘণ্টা পরেই সে সংখ্যা বেড়ে পৌঁছয় চল্লিশে। আজ সকালে জানা যায়, অন্তত ষাট জন মারা গেছেন। কাবুলের একজন স্বাস্থ্য আধিকারিক এমনটাই নিশ্চিত করেন। বেলা গড়াতেই সে সংখ্যা পেরোল ১০০। বিমানবন্দরের কাছাকাছি হাসপাতালগুলিতে পা ফেলার জায়গা নেই। সর্বত্র হাহাকার ও আর্তচিত্‍কার। এরই মধ্যে কিছু ভিডিও সামনে এসেছে, যা দেখলে রীতিমতো শিউরে উঠতে হয়, চোখ ঢাকতে হয়। বিমানবন্দরের গেটের সামনে সারি দিয়ে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। যেন মহাকাব্যের পাতার কোনও যুদ্ধের দৃশ্য। থইথই করছে রক্ত, জল। কোথাও দেখা যাচ্ছে মৃতের পরিবার-পরিজন দেহ ধরে টেনে সরানোর চেষ্টা করছেন। বিশ্বের ইতিহাসে এক চরম মর্মান্তিক অধ্যায় হয়ে রইল গতকালের কাবুল বিস্ফোরণ। কয়েকদিন আগেই আমেরিকা ও অন্যান্য পাশ্চাত্য দেশ আফগানিস্তানে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছিল, কেউ কাবুল বিমান বন্দরের কাছে যাবেন না। কারণ সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণ ঘটে কাবুল বিমান বন্দরের কাছে।



প্রথমে বিমানবন্দরের অ্যাবি গেটের সামনে একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়। ওই এলাকাটি আমেরিকার সেনা দিয়ে ঘেরা ছিল। তার পরেই শুরু হয় এলোপাথাড়ি গুলি-বর্ষণ। এক শিশুর মৃত্যুর খবর মেলে। মোট ১৩ জন মারা গেছেন বলে জানা যায়। তার পরেই দীর্ঘ হতে থাকে মৃত্যুমিছিল। তবে এখানেই শেষ নয়। মার্কিন সেনার তরফে খবর, আরও বিস্ফোরণ হতে পারে। ফলে গোটা এলাকা যেন থমথম করছে। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হলেও আশঙ্কা এড়ানো যাচ্ছে না কিছুতেই। কারণ গতকালও খবর থাকার পরেও কার্যত এড়ানো যায়নি বিপর্যয়। মার্কিন সেনা সূত্রের খবর, গতকালই আশঙ্কা ছিল কিছু ঘটার। আমেরিকা আফগানিস্তানে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছিল, কেউ কাবুল বিমান বন্দরের কাছে যাবেন না। কারণ সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণ ঘটে কাবুল বিমান বন্দরের কাছে। একটা নয়, পরপর দুটো। জানা গেছে, গতকাল প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটার পরেই কাবুলে ফ্রান্সের দূত সম্ভাব্য দ্বিতীয় বিস্ফোরণ সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। ফরাসি দূত ডেভিড মার্টিনন টুইট করে বলেন, 'আফগান বন্ধুদের উদ্দেশে বলছি, আপনারা যদি বিমান বন্দরের গেটের কাছে থাকেন, অবিলম্বে সরে আসুন। কোনও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন। কারণ যে কোনও সময় আর একটি বিস্ফোরণ হতে পারে।' এর পরেই ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণও। কিছুই করা যায়নি তার আগে। রক্তবন্যায় ভেসে গেছে সারি সারি ছিন্নভিন্ন দেহ। আফগান রিপোর্টার বিলাল সারওয়ারি বলেন, স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, এক আত্মঘাতী বোমারু ভিড়ের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটায়। তারপরে আরও একটা। একজন গুলিও চালাতে থাকে। বিস্ফোরণে ও গুলিতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours